শিগগির শুরু হচ্ছে সিলেট-ছাতক রেলপথ সংস্কারের কাজ

প্রকাশ | ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:১৩ | আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:২৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, সুনামগঞ্জ

২০২২ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর থেকে পুরোপুরি বন্ধ আছে সিলেট-ছাতক ৩৪ কিলোমিটার রেলপথ। কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর রেলপথটি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ইতোমধ্যে এই প্রকল্পের কাজ পেয়েছে মীর আখতার হোসেন লিমিটেড। দ্রুতই এর বাস্তবায়ন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আফজাল হোসেন।

জানা গেছে, করোনা মহামারির সময় থেকে এ পথে রেল যোগাযোগ প্রথমে বন্ধ হয়। পরে বন্যায় রেলপথের প্রায় ১২ কিলোমিটার মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত বৃহস্পতিবার (০২ জানুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় রেলপথটি সংস্কার প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়।

ব্রিটিশ আমল থেকে শিল্প শহর হিসেবে খ্যাতি রয়েছে ছাতকের। সে সময় সিলেট থেকে ছাতক পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারিত হয়েছিল বাণিজ্যিক কারণে। এরপর পরিকল্পনা ছিল সেখান থেকে সুনামগঞ্জ জেলা শহর (তৎকালীন মহকুমা) পর্যন্ত সম্প্রসারিত করার। আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত রেলমন্ত্রী থাকাকালে সেই পুরোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিষয়টি আলোচনায় আসে। তবে রেল মন্ত্রণালয় থেকে তিনি সরে গেলে পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। নতুন পরিকল্পনায় রেললাইনটি ছাতককে বাদ দিয়ে গোবিন্দগঞ্জ থেকে সুনামগঞ্জে লাইন নেওয়ার কথা বলা হয়। এর প্রতিবাদে সেই সময়ে সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক সোচ্চার হয়ে ওঠেন। এতে মন্ত্রী-এমপির দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে। যার ফলে পুরোনো সিলেট -ছাতক রেললাইন ও স্টেশন সংস্কার কাজ চাপা পড়ে থাকে। প্রায় ৫ বছর ধরে সিলেট-ছাতক রেলপথ বন্ধ থাকার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রেলপথটি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে।

এদিকে শুক্রবার বিকালে রেলওয়ের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আফজাল হোসেন বাংলাদেশ রেলওয়ে সুনামগঞ্জের ছাতক বাজার স্টেশন, কংক্রিট স্লিপার প্ল্যান্ট পরিদর্শন করেছেন।

এসময় তিনি জানান, সিলেট-ছাতক রেলপথ ও স্টেশন সংস্কারে মোট ২১৭ কোটি ৩৪ লাখ  হাজার ৩৬৯ টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্প একনেক থেকে ২০২৩ সালের ১১ এপ্রিল অনুমোদিত হয়েছে, প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২০২৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। প্রকল্পের ব্যয়ের ৮০ শতাংশ ইউএস ডলার ও ২০ শতাংশ বাংলাদেশি টাকায় পরিশোধ করা হবে। 

তবে এতদিনে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে।

এদিন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা ছাতকস্থ কংক্রিট স্লিপার প্লান্ট উৎপাদন প্রক্রিয়ার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন রেলওয়ের ডিজি। 

এসময় বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (পূর্ব) মো. সুবক্তগীন, প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিয়া, ডি.আর.এম. আরিফ মহি উদ্দিন, নির্বাহী প্রকৌশলী ছাতক বাজার (অ.দা.) আহসান হাবিব, চিফ কমান্ডড্যান্ট আছাবুল ইসলাম, ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (কার্য) ছাতক বাজার আব্দুল নুর সহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

রেলওয়ের ডিজির শনিবার ছাতক-ভোলাগঞ্জ রজ্জুপথ ও রেলওয়ের ভোলাগঞ্জ কোয়ারি এলাকা পরিদর্শন করার কথা রয়েছে।

ঢাকাটাইমস/০৪জানুয়ারি/ইএস