রাঙ্গুনিয়ায় সেতু আছে সাত বছরেও নেই সড়ক, জনদুর্ভোগ চরমে
প্রকাশ | ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:৫১

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে সেতু নির্মাণের পর সাত বছর শেষ হলেও নির্মাণ হয়নি সংযোগ সড়ক। এতে দুর্ভোগে আছেন হাজারো মানুষ।
প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে ২৪ ফুট দৈর্ঘ্যের এই সেতুটি নির্মাণ করা হলেও এর দুই পাশে নেই কোনো সংযোগ সড়ক। ফলে কোটি টাকার সেতুটি কাজে আসছে না সেখানকার হাজার হাজার মানুষের। কাঙ্খিত সেতু তৈরি হলেও চলাচলের সড়ক না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন গ্রামের হাজার হাজার বাসিন্দা।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, সড়কটি নির্মাণে কয়েকবার টেন্ডার প্রক্রিয়ায় গেলেও কোনো ঠিকাদার কাজটি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। নতুন করে টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সড়কটি সংস্কার করে দেয়ার কথা জানান দায়িত্বশীলরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাশের খালে ভেঙে পড়া উঁচু-নিচু সরু সড়কটি দিয়ে গ্রামের বাসিন্দা, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ জনসাধারণ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। সড়কটির মাঝ বরাবর দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ২০১৫- ২০১৬ অর্থ বছরে ২৪ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণ করে। কিন্তু সেতুটি নির্মাণের পর এখনো সড়কের কাজ হয়নি। বেহাল সড়ক থেকে সেতুটি অনেক উপরে। স্থানীয়রা বালুর বস্তা দিয়ে উঁচু সেতুটিতে উঠা নামার ব্যবস্থা করেছেন। তবে পুরোপুরিভাবে সেতুটির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হলে সংযোগ সড়কের বিকল্প নেই বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
এলাকাবাসীরা জানান, ইউনিয়নের পশ্চিম সরফভাটা ছনাগাজী এলাকা থেকে পশ্চিমে মৌলানা গ্রামে যাওয়ার জন্য একমাত্র যোগাযোগমাধ্যম সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। ইতোমধ্যেই সড়কের অর্ধেক অংশ খালে ভেঙে পড়েছে। এতে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্থানীয় হাজার হাজার বাসিন্দা। গ্রামের পূর্বদিকে পশ্চিম সরফভাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তরে আবদুল কাদের জিলানী মাদ্রাসা এবং জিলানী শাহি মতিউল্লাহ জামে মসজিদ ও কবরস্থান এবং দক্ষিণে রয়েছে নেছার উল্লাহ শাহ মাজার ও মাদ্রাসা। গুরুত্বপূর্ণ এসব প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার একমাত্র সড়কটি গিয়ে শেষ হয়েছে পশ্চিমে কর্ণফুলী নদীতে। সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে মৃত লাশ নিয়ে যাওয়া যায় না। স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসাগামী মানুষের যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। এমনকি এলাকায় কোনো ধরনের যানবাহনও প্রবেশ করতে পারে না। ফলে অসুস্থ রোগীদেরও সহজে চিকিৎসা সেবা দিতে নেয়া যায় না। সড়কটি ঠিক হলে সিএনজি অটোরিকশা, ইজিবাইকসহ বিভিন্ন যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচল করতে পারবে। এতে স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রার আমূল পরিবর্তন হবে।
স্কুল শিক্ষক আমিনুল ইসলাম, স্থানীয় দোকানদার জালাল উদ্দিন, বৃদ্ধ আবুল বশর ও স্থানীয় বাসিন্দা রহিম উদ্দিন বলেন, সেতু নির্মাণের সাত বছর শেষ কিন্তু; এখনো সড়কের কাজ হয়নি। দুই বার নাকি টেন্ডার হয়েছে। কিন্তু তারপরও প্রায় তিনশত মিটারের মতো সড়কটি কেন যে হচ্ছে না, তাও জানি না। বর্ষাকালে এটি দিয়ে একেবারে যাওয়া যায় না। পাশের খালের পানি উপচে কোমর সমান পানিতে প্লাবিত হয় সড়কটি। আমরা তারা দ্রুত সড়কটি করে দিতে কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল সূত্র জানায়, সড়ক ও সেতু জলবায়ু ট্রাস্ট বাস্তবায়ন করছে অন্যদিকে সড়কের পাশ খালের তীরবর্তী পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন হওয়ায় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে নিশ্চিত করেন।
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদুল হাসান বলেন, বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। শিগগিরই প্রয়োজনীয় এপ্রোচ সড়কের কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।
(ঢাকা টাইমস/২০জানুয়ারি/এসএ)