আ.লীগকে নিষিদ্ধ করতে না পারা অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতা: আবু হানিফ
প্রকাশ | ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:১১ | আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:২০

গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা অনেক বেশি। কিন্তু উপদেষ্টা পরিষদ দুর্বল হওয়ায় তারা সঠিক কিংবা কঠোর কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছর দেশে গুম খুন করেছে, সব শেষ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেশে গণহত্যা চালিয়েছে, কিন্তু সেই আওয়ামী লীগের অপরাধীদের বিরুদ্ধে সরকার তেমন কোন ব্যবস্থা নিতে পারছে না সরকার। দল হিসেবে আওয়ামী লীগও অপরাধের সঙ্গে জড়িত। গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে না পারা অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতা।
বৃহস্পতিবার বিকালে সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি) সুনামগঞ্জ জেলা শাখার কমিটি গঠনের লক্ষ্যে মতবিনিময় ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আবু হানিফ বলেন, আমরা সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছি সেগুলো পর্যালোচনা করে বাস্তবায়ন করতে হলে রাষ্ট্র সংস্কারের পূর্বে উপদেষ্টা পরিষদেরও সংস্কার আনা জরুরি।
তিনি আরও বলেন, আমরা দেখেছি সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ গণ-আন্দোলনের মুখে পালিয়ে গেছে। গত ৮ ডিসেম্বর তিনি রাশিয়ায় পালিয়ে যান। এর ফলে দেশটিতে তার রাজনৈতিক দল বাথ পার্টির কয়েক দশকের ক্ষমতার অবসান ঘটেছে। এবার তার দলকে বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে দেশটির ডি ফ্যাক্টো সরকার। কিন্তু গণহত্যায় জড়িত আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কেন অন্তর্বর্তী সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে না। দেশে বিভিন্ন স্থানে এখনও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে চলাফেরা করলেও সরকার ব্যবস্থা নিতে পারছে না। বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ গুপ্ত হত্যা চালাচ্ছে কিন্তু প্রশাসন কিছুই করতে পারছে না। যেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হবে সঙ্গে সঙ্গে সেখানকার এসপি, ডিসি, ইউএনও ও ওসি বান্দরবান পাঠান, দেখবেন প্রশাসন কীভাবে তখন তৎপর হয়। একশরও বেশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল কিন্তু মাত্র ৩০ জনকে আটক করেছে, এটা নিয়ে হাইকোর্টও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। অপরাধীদের ধরতে ব্যর্থ হওয়ায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ করা উচিত।
তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ার সুযোগ করে দিয়েছে। এই দেশে রাজনীতিতে দুর্বৃত্তদের প্রভাব রয়েছে। রাজনীতির ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য শিক্ষিত মেধাবীদের রাজনীতিতে যুক্ত হতে হবে। নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য তরুণদের নেতৃত্ব দিতে হবে।
তরুণরা পৃথিবীর ইতিহাসে পরিবর্তনের মূল বাহক উল্লেখ করে আবু হানিফ আরও বলেন, একটা বিষয় খেয়াল করলে দেখবেন গণহত্যার দোসররা এতো দিন চুপ ছিল। আওয়ামী লীগ পালিয়ে থেকে কর্মসূচির নামে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করছে। তারা ফেব্রুয়ারিতে নাকি হরতাল অবরোধের মত কর্মসূচি দিবে। এসব কর্মসূচির নামে যেকোনো বিশৃঙ্খলাকে মোকাবিলার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি। বিভিন্ন জায়গায় দেখা যাচ্ছে সুশীলতার ছলে একটা গোষ্ঠী আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে। তাদের বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
গণঅধিকার পরিষদ সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, রাজনীতিবিদদের মুখের কথা এবং মনের কথা এক হবে। দেখা মুখে বলে এক আর বাস্তবে করে আরেক। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে আগে আমাদের নিজেদেরকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। আমরা আগামীতে স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিবো। নিজেদের ইতিবাচক কাজের মাধ্যমে জনগণের কাছে যেতে হবে, জনগণের পাশে থাকতে হবে। আমরা কোনো চাঁদাবাজ দখলদারকে প্রশ্রয় দিবো না। গণঅধিকার পরিষদের অবস্থান চাঁদাবাজ ও দখলদারদের বিরুদ্ধে।
মতবিনিময় ও আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সুনামগঞ্জ জেলা গণঅধিকার পরিষদের সাবেক সভাপতি মাওলানা আলী আজগর, সঞ্চালনা করেন গণঅধিকার পরিষদ সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার আহ্বায়ক মোশাহিদ মিল্টন। এসময় জেলা ও উপজেলার নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
(ঢাকাটাইমস/৩০জানুয়ারি/জেবি/এমআর)