জবাবদিহিতা নেই বলেই গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে সরকার: রিজভী
প্রকাশ | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫:০৯ | আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫:১৫

জবাবদিহিতা নেই বলেই সরকার গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, “এই সরকার ১২ কেজি গ্যাস সিলিন্ডারে ১৯ টাকা বাড়িয়েছে এটা তো হতে পারে না। যারা সীমিত আয়ের মানুষ। নিম্ন আয়ের মানুষ সিএনজি, রিকশাচালক যারা দিনমজুরি করে খায় তাদের ওপর ভয়ংকর চাপ পড়বে। এই যে প্রতি সিলিন্ডারে ১৯ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে এটা অযৌক্তিক। এটা গণবিরোধী। নির্বাচিত সরকার থাকলে এ ধরনের পরিস্থিতি হবে না।”
মঙ্গলবার দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্প অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, “আমরা গণতান্ত্রিক দল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সাপোর্ট দিই। কিন্তু আপনাদের (সরকারকে) মনে রাখতে হবে, আপনাদের সিদ্ধান্ত যেন গণবিরোধী না হয় গরিব মানুষ মারার সিদ্ধান্ত যেন না হয়। এমনিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য প্রতিদিন বাড়ছে। চালের দাম কমাতে পারেননি। তার মধ্যে যদি গ্যাসের দাম বাড়ানো হয় তাহলে ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ ছাড়া কিছুই নয়।”
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, “শেখ হাসিনা দেশের জনগণের ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছিল। সেই ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। এই দেশে কে সরকার গঠন করবে তা নির্ধারণ করবে দেশের জনগণ। কিন্তু শেখ হাসিনা সেটা করতে দেয়নি। ছাত্র-জনতার রক্তঝরা গণআন্দোলনে সেই ভয়ংকর ফ্যাসিবাদ শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছে এবং দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য জনগণের আসা জাগানোর জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অনেক কিছু করার আছে। দেশের জনগণ গত ১৬-১৭ বছর ধরে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে নাই। ভোট দিতে পারে নাই। জনগণের চাওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেই পরিবেশটা তৈরি করবে, দেশের জনগণ যাতে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে ভোট দিতে পারে।”
সরকারের উদ্দেশে রিজভী আরও বলেন, “সংস্কারের নামে জনগণের চোখে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করা যাবে না। বিএনপির পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, আপনারা সংস্কার করলে করুন, কিন্তু সংস্কারের নামে গণতন্ত্রকে মজবুত শক্তিশালী করার জন্য যে কাজগুলো রয়েছে সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে গণতন্ত্র মানেই হচ্ছে জনগণের শক্তি জনগণের ক্ষমতা। সেই ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। তার জন্যে নির্বাচনের তারিখ ঠিক করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম এবং প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। কে সংগঠন তৈরি করবে। কে দল তৈরি করবে সেই দায়িত্ব হচ্ছে সেই ব্যক্তির এই দায়িত্ব প্রধান উপদেষ্টার নয়। একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা আপনাকে (প্রধান উপদেষ্টা) করতে হবে তা না হলে জনগণের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি হবে যে শেখ হাসিনার কোনো প্রেতাত্মা আবার জন্ম নেয় কিনা।”
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “গণতান্ত্রিক সরকার নেই বলে আজ ইনভেস্টমেন্ট হচ্ছে না। বিনিয়োগ করতে কেউ সাহস পাচ্ছে না। কারণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হচ্ছে সাময়িক সময়ের সরকার। সুতরাং মানুষ অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে। মানুষ একটা ধোঁয়াশার মধ্যে আছে। এই অনিশ্চয়তা কাটানোর জন্যই রাজনৈতিক সরকার দরকার। জনগণের ক্ষমতা জনগণকে ফিরিয়ে দেবে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন যাতে ঘটাতে পারে সেই ধরনের সরকার দরকার।”
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আফরোজা খান রিতা, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইদুল আলম বাবুল, সহ-অর্থ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, এস এ জিন্নাহ কবির প্রমুখ।
(ঢাকাটাইমস/০৪ফেব্রুয়ারি/জেবি/এফএ)