আকিকার দাওয়াত নিয়ে জামাই-শ্বশুরে তুলকালাম

প্রকাশ | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৬:৩৫

বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

দিনাজপুরের বিরামপুরে আকিকার দাওয়াত দেওয়াকে কেন্দ্র করে মেয়ের জামাইকে পিটিয়েছেন শ্বশুর। মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে শ্বশুরের লোকজনকে প্রতিহত করেছে গ্রামবাসী। এমনই তুলকালাম ঘটনায় আটক শ্বশুরের লোকজন পরে পুলিশের কাছে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাতে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার নম্বর মুকুন্দপুর ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কেশবপুর গ্রামের মো. ছলেমান হোসেনের ছেলে মো. সুমন হোসেনের (২৭নবজাত সন্তানের  আকিকার দাওয়াত দেওয়াকে কেন্দ্র করে তুলকালাম ঘটে। সুমনের শ্বশুর মো. অছিম উদ্দিন তার দুই ছেলে, মেয়ে মেয়ের বন্ধুসহ ২৫-৩০ জন  লোক নিয়ে সুমনের বাবা-মা, বোন,  ভগ্নিপতি তার দুই মামাকে দরজা বন্ধ করে বাড়িঘর ভাঙচুর মারপিট করেন বলে অভিযোগ।

এ সময় সুমনের মা বাইরে এসে চিল্লাচিল্লি করলে তাদের প্রতিবেশী মো. আমানুর রহমান ৯৯৯- ফোন দিয়ে পুলিশের সাহায্য চান।

এদিকে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয় গ্রামে ডাকাত পড়েছে। সবাই যেন  লাঠিসোটা নিয়ে বের হন। মুহূর্তের মধ্যে পুরো গ্রামের লোকজন লাঠিসোটা দা-বটি নিয়ে ধর ধর শব্দে গ্রামের পাশে ফসলি মাঠে মোবাইলের লাইট টর্চলাইট নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করে ডাকাত খুঁজতে থাকেন। পরে তারা চার-পাঁচজন অপরিচিত  যুবককে ধরে রুমের মধ্যে আটকে রাখেন।

কেশবপুর জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন মো. গোলাপ হোসেন বলেন, ‘হাবিবপুর বিরামপুর পূর্ব পাড়ার কিছু লোক তাদের গ্রামে হামলা করেন। গ্রামের লোকজন আমাকে মসজিদে মাইকে ঘোষণা দেওয়ার কথা বললে আমি মসজিদে মাইকে ঘোষণা করি।’

সুমনের শ্বশুর মো. অছিমদ্দিন বলেন, ‘আমার মেয়ে চার দিন হলো সিজার অপারেশনের মাধ্যমে শিশুর জন্ম দিয়েছে। আগামীকাল আমার নাতির আকিকা। মেয়ে ফোন করে বলেছে  জামাই আকিকার জন্য দুইটা ছাগল কিনেছেন। আমি ফোনে বলি আর কিছু টাকা দিয়ে মাংস কিনে বড় করে অনুষ্ঠানটা করা যায় কি না। এটি বলায় তারা স্বামী-স্ত্রী ঝগড়া লাগে। আমি দেখতে এলে তাদের লোকজন আমাকে অপমান মারধর করেন। পরে আমার ছেলের বন্ধুরা এলে গ্রামের মাইকে ঘোষণা দিলে তুলবালাম বাঁধে।

মুকুন্দপুর ইউনিয়নের নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, জামাইয়ের বাড়িতে শ্বশুরের এমন ঘটনা দুঃখজনক। পুলিশ স্থানীয় মুরব্বিদের পরামর্শে আর যেন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি  তৈরি না হয় সেজন্য মুসলেকা দিয়ে হাবিবুর হোসেন হীরা, আল রিমন, আরিফুল ইসলাম আরিফসহ সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হয়।  

 বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক বলেন, গতকাল রাতে  কেশবপুর গ্রাম থেকে ৯৯৯-এ কলপেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তাৎক্ষণিক তদন্তের পর মুচলেকা নিয়ে  আটক ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়। বিষয়ে জামাই   শ্বশুরের পক্ষ থেকে  কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে জানান ওসি।