জুলাই আন্দোলনে ঢাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত ১২২ হামলাকারী শনাক্ত

প্রকাশ | ১৩ মার্চ ২০২৫, ২১:২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত ১২২ হামলাকারীকে শনাক্ত করেছে তথ্যানুসন্ধান কমিটি।

বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাবির উপাচার্য অফিস সংলগ্ন লাউঞ্জে উপাচার্যের হাতে তদন্ত প্রতিবেদনটি জমা দেন জুলাই হামলা সংক্রান্ত তথ্যানুসন্ধান কমিটির আহ্বায়ক ও আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল ইসলাম সুপন। 

এ সময় সত্যানুসন্ধান কমিটি প্রায় ৫৫০ পাতার একটা প্রতিবেদন উপাচার্য বরাবর জমা দেন।

কাজী মাহফুজুল ইসলাম সুপন বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যত হামলা হয়েছে আমরা তার সবকিছু এ প্রতিবেদনে আনার চেষ্টা করেছি। সেখানে আমরা দেখেছি ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করা হয়েছে। যেখানে ১২২ জন ঢাবি শিক্ষার্থী যারা হামলায় জড়িত তাদের প্রত্যক্ষ প্রমাণ আমরা পেয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘হামলায় বহিরাগতও অনেক শিক্ষার্থীর প্রমাণ আমাদের হাতে এসেছে। এবং এ প্রতিবেদনটি সিন্ডিকেট থেকে পাশ হয়ে আসলে আমরা তাদের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জানাবো এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে। এছাড়া যারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের না তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিতে বলা হয়েছে।’

কমিটির আহবায়ক বলেন, ১৫ জুলাই বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনায় আমরা দেখেছি মল চত্বরে যারা হামলা করেছে তাদের মাথায় সাদা ক্যাপ পরিহিত ছিল। এরপর যারা আহত হয়েছে তারা যখন ঢাকা মেডিক্যালে গিয়েছেন তাদেরকেও হামলা করেছিল ছাত্রলীগ। এরপর ডাক্তারদের বলা হয়েছিল চিকিৎসা না দিতে। যেখানে আমাদের প্রশাসনেরও যোগসাজশ থাকতে পারে। যা ছিল পূর্বপরিকল্পিত।

কোন প্রক্রিয়া অবলম্বন করে প্রতিবেদনটি করা হয়েছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির আহবায়ক বলেন, ‘আমরা তদন্ত করার সময় বিভিন্ন জায়গার সিসিটিভি ফুটেজ খুঁজতে গেলে সেখানে তার কোনো হার্ডডিস্ক পাইনি। সব হার্ডডিস্ক সরিয়ে ফেলা হয়েছে। আমরা সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কাছে একটা মেইল ও নাম্বার পাঠিয়েছি। শিক্ষার্থীরা সেখানে জুলাইয়ে হামলার নানা ছবি, ভিডিও পাঠিয়েছে। এছাড়া আমরা ন্যাশনাল ও ইন্টারন্যাশনাল পত্র-পত্রিকার সংবাদগুলো দেখেছি তার ওপর ভিত্তি করে রিপোর্টটি করা হয়েছে।’

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ক্ষেত্রে শিক্ষকদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চলাকালীন ৭০জন শিক্ষককে পাওয়া গেছে যারা শিক্ষার্থীদের জামাত- শিবির-ছাত্রদল- রাজাকার বলে ট্যাগিং করেছে। যেটা আন্দোলনে প্রভাব ফেলেছে। কেননা শিক্ষক দ্বারা শিক্ষার্থীরা প্রভাবিত হবে সেটা স্বাভাবিক। এ বিষয়ে তাদের কাছে জানতে চাইলে অনেকে শিকার করেছেন এবং সেটার জন্য সরি বলেছেন; আমরা সেটা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছি।

উল্লেখ্য, প্রতিবেদনটি জমা দেয়ার সময় ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান, উপ-উপাচার্য প্রশাসন অধ্যাপক সাইমা হক বিদিশা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ ইকরামুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/১৩মার্চ/এমআর)