জায়নবাদী নির্মমতার বিরুদ্ধে বিশ্বের শান্তিপ্রিয় মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: মুহাম্মদ রেজাউল করিম
প্রকাশ | ২০ মার্চ ২০২৫, ১৭:০২

সন্ত্রাসী, দখলদার ও জায়নবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েল কর্তৃক গাজায় নির্মম ও নিষ্ঠুর গণহত্যার বিরুদ্ধে জাতিসংঘ, আরব লীগ, ওআইসি ও কমনওয়েলথ সহ আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিশ্বের শান্তিপ্রিয় মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাড্ডায় উত্তর বাড্ডা কামিল মাদরাসার সামনের সড়কে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের নৃশংস ও নির্মম গণহত্যা এবং বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে হামলা বন্ধের দাবিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত এক বিক্ষোভ পূর্ব সমাবেশে এসব কথা বলেন।কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড.মুহাম্মদ রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিমুদ্দিন মোল্লা, ডা.ফখরুদ্দিন মানিক,ইয়াসিন আরাফাত,কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মুহিব্বুল্লাহ, জামাল উদ্দিন, প্রচার-মিডিয়া সেক্রেটারি আতাউর রহমান সরকার, নাসির উদ্দীন, মহানগরী পশ্চিম শিবির সভাপতি সালাহ উদ্দিন প্রমুখ।বিশাল মিছিল উত্তর বাড্ডা কামিল মাদ্রাসার সামনে থেকে শুরু হয়ে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে রামপুরা ব্রিজে এসে পথসভার মাধ্যমে শেষ হয়।
ড. রেজাউল করিম বলেন, পবিত্র মাহে রমযানে জায়নবাদী,সন্ত্রাসী অবৈধ রাষ্ট্র শান্তিচুক্তি ভঙ্গ করে গাজায় হামলা ও নির্মম গণহত্যা চালিয়ে বিশ্বের সাড়ে ৭শ কোটি মানুষের কলিজায় আঘাত করেছে। এ হামলায় মাধ্যমে তারা শুধু শান্তিচুক্তি ভঙ্গই করেনি বরং যুদ্ধাপরাধ ও মানবাধিকারের মারাত্মক লঙ্ঘন করেছে। কিন্তু এসব করে দখলদার আগ্রাসী বাহিনীর শেষ রক্ষা হবে না বরং অচিরেই ইসলাম ও মুসলমানদের চূড়ান্ত বিজয় নিশ্চিত হবে।
তিনি অতীতের ইতিহাস টেনে বলেন, ইতিহাস সাক্ষী মুসলমানরা কখনো পরাজিত হয়নি বরং পবিত্র মাহে রমজানে ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধে সীমিত সামর্থ্য ও জনবল নিয়ে বিশাল কাফের বাহিনীর বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছে। তাই জায়নবাদী নির্মমতায় মুসলিম উম্মাহর বিচলিত হওয়ার কোন কারণ নেই বরং চূড়ান্ত বিজয় গাজা ও ফিলিস্তিনবাসীর জন্য অপেক্ষা করছে। তিনি ইসরায়েলী বর্বরতার বিরুদ্ধে বিশ্বের শান্তিপ্রিয় ও আত্মসচেতন মানুষকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান। অন্যথায় জায়নবাদীরা গোটা বিশ্বকেই অস্থির করে তুলবে।
জামায়াতের এই নেতা বলেন, গত প্রায় ১৬ বছর পতিত আওয়ামী বাকশালী ও ফ্যাসীবাদী শক্তি দেশে অপশাসন, দুঃশাসন ও নির্মম গণহত্যা চালিয়েছে। তারা ইসরায়েল থেকে অস্ত্র আমদানী করে জামায়াত-শিবিরসহ বিরোধী দলের ওপর ব্যাপক গণহত্যা চালিয়েছে। কথিত বিচারের নামে প্রহসন করে শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, শহীদ আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, আব্দুল কাদের মোল্লা, শহীদ মোহাম্মদ কামারুজ্জান ও শহীদ মীর কাসেম আলীসহ জাতীয় নেতাদের শুধু হত্যা করা হয়নি বরং অন্য শীর্ষ নেতৃত্বকেও তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনা ও বিচারকরা পালিয়ে গেলেও আমাদের প্রাণপ্রিয় নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম এখনো কারাগারে অবরুদ্ধ রয়েছেন।
এসময় তিনি অবিলম্বে এটিএম আজহার সহ আলেম-উলামাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
মহানগরী উত্তর সেক্রেটারি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিও স্বাভাবিক হয়নি। রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেক্টরে এখনো পতিত স্বৈরাচারের প্রতিভূরা সক্রিয় রয়েছে। তাই দেশকে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের প্রভাবমুক্ত করতে সবার আগে ফ্যাসীবাদী ও তাদের দোসরদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। খুনিদেরকে কোন ভাবেই ছাড় দেওয়া যাবে না। আর প্রয়োজনীয় সংস্কারের পরই হতে হবে নির্বাচন। সংস্কার, বিচার ও আগে স্থানীয় নির্বাচন ছাড়া জনগণ কোনো নির্বাচন মেনে নেবে না। যারা সংস্কার ছাড়াই নির্বাচন চাচ্ছেন তারা জাতীয় স্বার্থের বিপরীতে নিজেদের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষকে প্রাধান্য দিচ্ছেন।
তিনি আগামী নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক করতে সরকারকে রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার আনার আহ্বান জানান। অন্যথায় আমাদের সকল অর্জনই ব্যর্থ হবে।
(ঢাকাটাইমস/২০মার্চ/জেবি/এমআর)