নির্বাচন চাওয়াকে অপরাধ হিসেবে দেখার কিছু নেই: জোনায়েদ সাকি

প্রকাশ | ০১ জুন ২০২৫, ২০:৪৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, বিচারের বিষয়ে মানুষ দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চায়। সংস্কার, নির্বাচন এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এগুলো পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কিত। বিচার-সংস্কার-নির্বাচন এগুলো এক সূত্রে গাথা। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সংস্কারগুলো দূরত্ব ও অনাস্থা দেশকে বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারে। নির্বাচন চাওয়াকে অপরাধ হিসেবে দেখার কিছু নেই। যদি ডিসেম্বরে নির্বাচন না হয় তাহলে সেটার ব্যাখ্যা জনগণের সামনে হাজির করতে হবে।

তিনি বলেন, নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ না দিলে সংস্কারের অনেক বিষয় সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। সংস্কারের অনেকগুলো বিষয়ে ঐক্যমত্য আছে আবার কিছু বিষয়ে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব। 

রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের গণসংহতি আন্দোলনের প্রথম নির্বাহী সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম-এর ৮ম মৃত্যুবার্ষিকীতে এক স্মরণসভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

জোনায়েদ সাকি বলেন, আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচন নিয়ে ঐকমত্য তৈরি করা এবং নানা বিষয় সংস্কারও সম্ভব। নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সরকার নিজেও নানা পক্ষপাত দেখাচ্ছে। দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাও জরুরি।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম বলেন, বাংলাদেশে এখন যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে আবদুস সালাম যখন রাষ্ট্র সংস্কার, সংবিধান নিয়ে আলোচনা তুলেছিলো তখন তা এতো সহজ ছিল না। বাংলাদেশ রাষ্ট্রকাঠামো যা আছে তা পরিবর্তন করতে হবে বিএনপিও ৩১ দফাতে বলেছে। রাষ্ট্র মেরামত বা সংস্কার যাই করি সেজন্য সংবিধান সংস্কার সভার নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের মতামত গ্রহণ করতে হবে।

ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, সংবিধানের মালিক জনগণ অন্য কেউ না। সংবিধানের মালিকানা জনগণের হাতে প্রত্যর্পণ করতে হবে। জামায়াত একটি রাজনৈতিক দল তাদের নিবন্ধন গত আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধভাবে বাতিল করে দিয়েছিলো আজকে কোর্ট সেটা ফিরিয়ে দিয়েছে। দেশ যেনো কোনো সংঘাতের দিকে না যায় সেটা আমাদের সকলের মনোযোগ দিতে হবে। সরকারকে বলবো সকলের সাথে আলোচনা করে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, যারা শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে সাহায্য করেছিলেন, এখন তারা নতুন বন্দোবস্ত করে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। ফ্যাসিজমের থেকে যাওয়া শিকড়ে পানি ঢেলে তারা আবার ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চাচ্ছেন। গণঅভ্যুত্থানে পক্ষের শক্তিগুলোর মধ্যে ঐক্যে ফাটল ধরেছে। কোনো অভ্যুত্থানের প্রথম সারির নেতারা এতটা বিতর্কিত হননি, যতটা এখন হচ্ছেন। তরুণেরা অনাকাঙ্ক্ষিত কাজে জড়িত হয়ে পড়েছেন, যা লজ্জাজনক।

এবি পার্টির সভাপতি মজিবর রহমান মঞ্জু বলেন, মুক্তিযুদ্ধ এমন একটি সংগ্রামের নাম যেটা সকলের জীবনের সুযোগ আসে না সালাম ভাইয়ের জীবন থেকে সেটা শিখছি। বিএনপিকে বলেছিলাম জাতীয় অধিকারের প্রশ্নে আপনারা ঐক্য গড়ে তুলুন। সরকার আমাদের ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারে নাই, রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্দিষ্ট রোডম্যাপ দিতে পারে নাই। আমাদের ঐতিহাসিক সুযোগ আমরা যেন নষ্ট না করি।

সভায় আরও বক্তব্য দেন জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম লালা, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য দেওয়ান আবদুর রশিদ নিলুসহ নেতৃবৃন্দ।

(ঢাকাটাইমস/০১জুন/জেবি/এমআর)