তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাশের দাবি পেশাজীবী সংগঠনগুলোর
প্রকাশ | ১৯ জুন ২০২৫, ১৯:৫৫ | আপডেট: ১৯ জুন ২০২৫, ১৯:৫৭

বাংলাদেশে প্রতিবছর তামাকজনিত রোগে ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষের অকাল মৃত্যু হয়। দেশে বর্তমানে প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করছেন। এমন বাস্তবতায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করতে প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাসের দাবি জানিয়েছে দেশের বিভিন্ন পেশাজীবী ও ব্যবসায়ী সংগঠন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ঢাকা আহছানিয়া মিশনের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণে পেশাজীবী সংগঠনের ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে এ দাবি জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন—বাংলাদেশ দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতি, বাংলাদেশ সুপারমার্কেট ওনার্স এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল সংস্থা (যাপ), বাংলাদেশ গ্রোসারী বিজনেস এসোসিয়েশন (বিজিবিএ), জাতীয় দোকান কর্মচারী ফেডারেশনসহ একাধিক পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা আহছানিয়া মিশনের সভাপতি ড. গোলাম রহমান, এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠানটির স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আহছানিয়া মিশনের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের সমন্বয়কারী শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন,
“গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (গ্যাটস)-২০১৭ অনুযায়ী দেশে প্রায় ১ কোটি ৯২ লাখ মানুষ ধূমপান করে, আর প্রায় ৪ কোটি মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার—যার হার ৪২.৭ শতাংশ।”
তিনি আরও বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনীর চূড়ান্তকরণে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
বক্তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনের দাবিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগে স্মারকলিপি ও চিঠি দিয়ে আসছেন তারা। এরই ধারাবাহিকতায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ খসড়া সংশোধনী তৈরি করে, যা বর্তমানে ৯ জন উপদেষ্টা ও ৩ জন সচিব সমন্বিত একটি পর্যালোচনা কমিটির কাছে আছে।
তারা জানান, প্রস্তাবিত সংশোধনীতে পাবলিক প্লেসে ধূমপানের নির্ধারিত এলাকা বিলুপ্ত, তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ, খুচরা বিড়ি-সিগারেট বিক্রি বন্ধ, ই-সিগারেট ও হিটেড টোব্যাকো থেকে তরুণদের সুরক্ষা, তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম নিষিদ্ধ, প্যাকেটে সতর্কবার্তা ৫০ থেকে ৯০ শতাংশে উন্নীতকরণের বাস্তবায়ন হলে জনস্বাস্থ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে এবং এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক হবে।
বক্তারা তামাক কোম্পানিগুলোর মিথ্যা প্রচারণারও প্রতিবাদ করেন। তারা বলেন,
“তামাক কোম্পানিরা বলছে সংশোধনী পাস হলে রাজস্ব ক্ষতি হবে, কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। ২০০৫ সালে আইন প্রণয়নের পর থেকে গত ১৮ বছরে তামাক থেকে রাজস্ব আয় বেড়েছে সাড়ে ১২ গুণ। একইসঙ্গে ২০০৯-২০১৭ সালে তামাক ব্যবহার ১৮ শতাংশ কমেছে।”
অনুষ্ঠানে তামাকবিরোধী বিভিন্ন সংগঠন ও ইয়ুথ ফোরামের প্রতিনিধিরাও অংশগ্রহণ করেন এবং সংশোধনী দ্রুত পাসের আহ্বান জানান।
(ঢাকাটাইমস/১৯জুন/এলএম)