বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টি’র আত্মপ্রকাশ, প্রধান উপদেষ্টা সেলিম প্রধান, আংশিক কমিটিতে আরও যারা আছেন
প্রকাশ | ২০ জুন ২০২৫, ১৯:৪৯ | আপডেট: ২১ জুন ২০২৫, ০০:১৯

‘সবার উপরে দেশ’ স্লোগানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করল ‘বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টি (বিআরপি)’। সাবেক সামরিক কর্মকর্তা, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিক্ষক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকদের সমন্বয়ে গঠিত এই দলটির প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে আছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সেলিম প্রধান।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বেলুন উড়িয়ে দলের আত্মপ্রকাশ ঘোষণা করেন জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ আনাসের মা সানজিদা খান দীপ্তি। এরপর দলের আংশিক কমিটির ঘোষণা করেন তিনি।
যারা আছেন দলের বিভিন্ন পদে
সভাপতি লে. কমান্ডার (অব.) মো. মেহেদী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মেজর (অব.) মো. রাজিবুল হাসান। আর প্রধান উপদেষ্টা সেলিম প্রধান।
দলটির সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন সাঈদ আলী সিকদার, ক্যাপ্টেন (অব.) শফিকুল ইসলাম, লে. কর্নেল (অব.) ইমরান, মো. আমাজ আহমেদ ও অ্যাডভোকেট মো. নাসিম উদ্দিন মো. বায়েজিদ।
এছাড়া যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন লে. (অব.) সাইফুল্লাহ খান, সাজ্জাদ হোসেন ইউনুস ও মো. আহসানুল্লাহ।
সাংগঠনিক সম্পাদক মেজর (অব.) রাকিবুল হাসান ও কৃষিবিদ মঞ্জুর হোসেন। সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ আবুল হাসানাত, মো. জাহিদুল ইসলাম, মুশাফিকুর রহিম রনি, ইঞ্জিনিয়ার কামরুল হাসান।
দলটির আইন বিষয়ক সমম্পাদক অ্যাডভোকেট অলিদ আহমেদ, নারী ও শিশু বিষয়ক সম্পাদক আনিকা তাসনিম খান ও সহ-সম্পাদক মৌসুমী আক্তার সুমি, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক শাহাদাত হোসাইন, পাবর্ত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সম্পাদক মেজর (অব.) শাহেদুল ইসলাম ও সহ-সম্পাদক মো. জহিরুল হক, দুর্যোগ ও ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত, আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম ও সহ-সম্পাদক শারমিন আক্তার মুক্তা, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মো. রাহুল আমিন এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক সহ-সম্পাদক ডা. সৌরভ চন্দ্র মজুমদার।
আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে দলের প্রধান উপদেষ্টা সেলিম প্রধান তার বক্তব্যে বলেন, সেনাবাহিনীর সদস্যরা চাকরিতে প্রবেশের আগে যেকোন মূল্যে দেশকে তারা সেভ করবে বলে শপথ করে ঢুকে। এই দলে থাকা সেনাবাহিনীর সদস্যরা এই দলের মাধ্যমে দেশকে সেভ করবে।
এ সময় যারা দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত তাদেরকে সতর্ক থাকার হুঁশিয়ারি দেন সেলিম প্রধান।
আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে দলের সভাপতি মো. মেহেদী হাসান বলেন, সব নাগরিকের সমান অধিকার, ইনসাফভিত্তিক সমাজব্যবস্থা, কল্যাণমুখী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্থায়ী সুশাসন প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের লক্ষ্য।
তিনি আরও বলেন, ভোটের রাজনীতি নয়, আমরা জনগণের রাজনীতি করতে এসেছি। আমরা বাংলাদেশপন্থী হতে চাই। আমরা কোনো দিল্লিপন্থী না, পিন্ডিপন্থী না, নিউইয়র্কপন্থী না, আমরা বাংলাদেশপন্থী রাজনীতি করতে চাই। যারা আমাদের সাথে ন্যায্যতার ভিত্তিতে সুসম্পর্ক স্থাপন করবে, সকলেই আমাদের বন্ধু। আমরা ন্যায্যতার ভিত্তিতে সকলের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে চাই।
অনুষ্ঠানে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন ইউনূস দলের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ঐতিহাসিক ’৪৭, ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ’২৪-এর গণ–অভ্যুত্থানের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক ও কল্যাণমুখী রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে আমরা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার দেশপ্রেমিক নাগরিক আজ বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টি (বিআরপি) নামের এক নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা দিচ্ছি। এই দল গঠনের পেছনে রয়েছে সেই বাঁধভাঙা জুলাই আন্দোলনের অনুপ্রেরণা, যেখানে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে একটি সুশাসনভিত্তিক বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রায় দুই হাজার বীর শাহাদাত বরণ করেছেন ও ৩০ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন।
লিখিত ঘোষণাপত্রে বলা হয়, বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টি (বিআরপি) হবে একটি জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল। পাশাপাশি ন্যায়ভিত্তিক সমাজব্যবস্থা, বৈষম্যহীন ও কল্যাণমুখী রাষ্ট্র গঠনের মূলনীতি নিয়ে সব রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও মর্যাদাভিত্তিক সম্পর্ক দলটির পররাষ্ট্রনীতি হবে বলেও জানানো হয় আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে।
এদিন বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান শুরু হয়। বৃষ্টি উপেক্ষা করে দলটিক একাধিক জেলা ও বিভিন্ন ইউনিটের নেতা-কর্মীরা এতে উপস্থিত হন।
এছাড়া জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের পরিবারের সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
(ঢাকাটাইমস/২০জুন/এলএম/এসএ)