ইরানের যুদ্ধকালীন ক্ষমতা আইআরজিসির কাছে হস্তান্তর করলেন আয়াতুল্লাহ খামেনি

প্রকাশ | ২১ জুন ২০২৫, ০৯:১৩ | আপডেট: ২১ জুন ২০২৫, ০৯:৪১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

ইসরায়েলের ধারাবাহিক হামলার মুখে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি যুদ্ধকালীন ক্ষমতা ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি)-এর সুপ্রিম কাউন্সিলের হাতে হস্তান্তর করেছেন। এমন সিদ্ধান্তকে বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘প্রি-এম্পটিভ ট্রান্সফার অব অথরিটি’— অর্থাৎ যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কমান্ড কাঠামো বজায় রাখতে এটি একটি কৌশলগত পদক্ষেপ।

 

ইরান ইন্টারন্যাশনাল-এর বরাতে জানা গেছে, গত পাঁচ দিন ধরে আয়াতুল্লাহ খামেনি জনসমক্ষে অনুপস্থিত। এই সময়ে তিনি রাজধানী তেহরানের উত্তর-পূর্বে লাভিজানে একটি ভূগর্ভস্থ বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গেছে। তার সঙ্গে রয়েছেন ছেলে মোজতবা খামেনি ও ঘনিষ্ঠ পরিবারের সদস্যরা।

 

এই সিদ্ধান্ত আসে এমন এক সময়ে, যখন ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর প্রধানকে হত্যা করেছে। একই সঙ্গে একাধিক হামলায় নিহত হয়েছেন দেশটির শীর্ষ বিজ্ঞানী ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা। পাল্টা জবাবে ইরানও ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।

 

এই সংঘাতের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যাল-এ একটি পোস্টে খামেনিকে ইঙ্গিত করে বলেন, "আমরা জানি তথাকথিত ‘সুপ্রিম লিডার’ কোথায় লুকিয়ে আছেন। তিনি সহজ টার্গেট, তবে আপাতত তাকে হত্যা করা হবে না। কিন্তু আমাদের ধৈর্য ফুরিয়ে আসছে।" তিনি আরও বলেন, বেসামরিক মানুষ বা আমেরিকান সৈন্যদের দিকে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হলে এর পরিণতি ভয়াবহ হবে।

 

অন্যদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান এক বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “ইসরাইল যদি হামলা অব্যাহত রাখে, তাহলে ইরান আগের চেয়ে আরও কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাবে।” তিনি আরও জানান, “ইরান শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষে, তবে তা তখনই সম্ভব যখন জায়নবাদীরা সন্ত্রাসী আগ্রাসন বন্ধ করবে এবং তার গ্যারান্টি দেবে।”

 

ইসরায়েল-ইরানের চলমান সংঘাতের আজ অষ্টম দিন। একাধিক পাল্টাপাল্টি হামলায় ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে পশ্চিমা গোয়েন্দা সূত্র জানাচ্ছে। পাল্টা জবাবে ইরানও উত্তর ও মধ্য ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।

 

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আয়াতুল্লাহ খামেনির এই সিদ্ধান্ত ইঙ্গিত দেয় যে, ইরান দীর্ঘস্থায়ী ও গভীর সংঘাতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে— যেখানে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ঝুঁকিতে থাকলে বিকল্প কমান্ড কাঠামো কার্যকর থাকবে।

 

(ঢাকাটাইমস/২১ জুন/আরজেড)