নতুন বাজার অবরোধ ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের

প্রকাশ | ২১ জুন ২০২৫, ১০:৩১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

অবৈধ বহিষ্কার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারী আচরণের প্রতিবাদে রাজধানীর নতুনবাজার মোড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) শিক্ষার্থীরা।

 

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো আলোচনা ছাড়াই একতরফাভাবে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে। সেইসঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই তারা শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি উপেক্ষা করে আসছে। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নেয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি চলবে।

 

পূর্বঘোষণা অনুযায়ী শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শিক্ষার্থীরা মূল সড়কে অবস্থান নেয়। এ সময় কুড়িল বিশ্বরোড থেকে বাড্ডাগামী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে পুলিশ কাজ করছে বলে জানিয়েছেন ভাটারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রাকিবুল হাসান।

 

ঢাকা টাইমসকে তিনি জানান, বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়া ও স্বেচ্ছাচারী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে ইউআইইউর শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। তাদের অবস্থানের কারণে জনভোগান্তি বেড়েছে।

 

ঘটনাস্থলে দায়িত্ব পালন করা ভাটারা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সুলতান বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের সড়ক ছেড়ে পাশে অবস্থান নেওয়ার অনুরোধ করেছি, যাতে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ না হয়ে যায়। তারা আমাদের জানিয়েছেন, কিছুক্ষণ থেকে তারা চলে যাবেন।

 

এদিকে, অবরোধস্থলে শিক্ষার্থীদের ‘হয় বহিষ্কার বাদ যাবে, না হয় আমার লাশ যাবে’, ‘প্রত্যাহার বহিষ্কার, তারপর হবে সংস্কার’, ‘পা চাটলে পুরস্কার, না চাটলে বহিষ্কার’, ‘বহিষ্কার প্রত্যাহার, করতে হবে করতে হবে’, ‘অথরিটি স্বৈরাচার, এবার তোরা গদি ছাড়’, ‘প্রাইভেটখাতে শিক্ষাকর, করতে হবে প্রত্যাহার’, ‘১ ২ ৩ ৪, প্রাইভেট সংস্কার’, ‘প্রাইভেট সব মাঠে থাক, সিন্ডিকেট নিপাত যাক’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে শোনা যায়।

 

মূলত, গত ২৬ ও ২৭ এপ্রিল ইউআইইউ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে উপাচার্যসহ ১১ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন। ২৮ এপ্রিল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে ২০ মে থেকে অনলাইন ক্লাস চালু হলেও শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ তা প্রত্যাখ্যান করে সরাসরি ক্লাস ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ তাদের ১৩ দফা যৌক্তিক দাবি উপেক্ষা করছে। বরং আন্দোলন দমন করতে বহিষ্কার ও তদন্তের ভয় দেখানো হচ্ছে। ট্রাস্টি বোর্ডের পক্ষ থেকে ২৬ মের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করলে টিউশন ফির সম্পূর্ণ ফেরত দেওয়ার প্রস্তাব দিলেও, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা ইউআইইউর ট্রাস্টি বোর্ড ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক ড. মো. সুলতান মাহমুদ ভূঁইয়া বলেন, আমরা চাই না কোনো শিক্ষার্থী শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হোক।

 

(ঢাকাটাইমস/২১জুন/এলএম)