শিবচরে সালিশে মিথ্যা বিচারের অভিযোগ, কিশোরীর আত্মহত্যা

মাদারীপুরের শিবচরে স্থানীয় সালিশের মিথ্যা বিচার সইতে না পেরে হাফিজা আক্তার (১৪) নামে এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার দওপাড়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের হাজী কাইমুদ্দিন শিকদার কান্দি এলাকায় নিজেদের বসতঘর থেকে ওই কিশোরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দেড় বছর আগে সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া কিশোরী হাফিজার সঙ্গে জোরপূর্বকভাবে শারীরিক সম্পর্ক করেন প্রতিবেশী আবু কালাম সরদারের ছেলে পেয়ার হোসেন। এতে হাফিজা অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়ে। লোক জানাজানি ও মান-সম্মানের ভয়ে থাকে কিশোরীর পরিবার।
অন্যদিকে পেয়ার আলী ভয়ভীতি দেখান মেয়েটিকে। পরে তার সহায়তায় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে হাফিজার গর্ভপাত করানো হয়। বর্তমানে বেশ কিছুদিন পেয়ার হোসেন আবার হাফিজাকে বিরক্ত করা শুরু করে। পাশাপাশি বাড়ি হওয়ায় যখন তখন ঘরে ঢুকে হাফিজার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করে।
এ ঘটনায় স্থানীয় মাতুব্বরদের কাছে বিচার দিলে এক সপ্তাহে দুইবার সালিশ বসে। কিন্তু সেখানে মাতুব্বররা অভিযুক্ত পেয়ার হোসেনের পক্ষ নেন বলে অভিযোগ। সালিশের পেয়ার হোসেনের জায়গায় ছোট ভাই আলী হোসেন দাঁড় করানো হয়। বলা হয়, সে-ই নাকি হাফিজার সঙ্গে অসভ্যতা করেছে।
জানা যায়, পেয়ার হোসেন স্থানীয় মেম্বার মোতাহার হোসেনের ইটভাটায় গাড়ির ড্রাইভারের কাজ করতেন। কিছুদিন পর তার বিদেশে যাওয়ার কথা। সে কারণে পেয়ার হোসেনের বদলে তার ছোট ভাইকে দিয়ে নাটক সাজানো হয়। এই মিথ্যা সালিশ মেনে নিতে পারেনি স্কুল পড়ুয়া হাফিজা।
বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ির পাশে পিকনিক ছিল। হাফিজার মা ও ভাইরা সেখানে ব্যস্ত ছিলেন। এই সুযোগে বাড়ির দরজা-জানালা বন্ধ করে সিলিংয়ের মোটা কাঠের সঙ্গে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস দেয় হাফিজা। তার বড় ভাই সবকিছু বন্ধ দেখে জানালা ভেঙে হাফিজার ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। ভাইয়ের কান্নাকাটিতে সবাই ছুটে আসে। যতক্ষণে হাফিজাকে নামানো হয় ততক্ষণ সে আর এহলোকে নেই।
হাফিজার ভাই নাসির মোল্লা বলেন, ‘আমার বোন মিথ্যা সালিশের কারণে আত্মহত্যা করেছে। সালিশ যদি সঠিকভাবে করা হতো, তাহলে আমার বোন বেঁচে থাকতো। তারা পক্ষ নিয়ে বিচার করেছে। আমি আমার বোনের মৃত্যুর বিচার চাই। সালিশে থাকা সবার বিচার চাই। পেয়ার হোসেন আর তার পরিবারের বিচার চাই।’
এদিকে, কিশোরী হাফিজার মৃত্যুর পর থেকে পেয়ার হোসেনের পরিবারের সকল সদস্য পলাতক। মেম্বার মোতাহার হোসেনের মুঠোফোনে বারবার ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোকতার হোসেন বলেন, ‘আইনি প্রক্রিয়া চলমান আছে। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
(ঢাকাটাইমস/৩জানুয়ারি/এজে)
সংবাদটি শেয়ার করুন
বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

বীর মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগম আর নেই

শ্রীপুরে বুথে ধর্ষণের ঘটনায় আসামি লিটন গ্রেপ্তার

সুন্দরবনে দুই বনদস্যু আটক

কুমিল্লায় সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ ইউনিট অচল, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে নগরবাসী

ভৈরবে আইভি রহমান পৌর স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তন

চলতি বছরে বরিশালে প্রথমবারের মতো করোনা শনাক্ত

ঝিনাইদহে ছেলের হাতে বাবা খুন

ঝালকাঠি জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতিসহ ১৬ সদস্যকে অব্যাহতি

জাফলংয়ে দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে বিক্ষোভ, যুবদল নেতা বহিষ্কার
