খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রা: বিদায় জানাতে নেতাকর্মীদের ঢল

অর্ধযুগেরও বেশি সময় পর দেশের বাইরে যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে রাজধানী গুলশানের বাসভবন ফিরোজায়।

এরইমধ্যে নেত্রীকে বিদায় জানাতে গুলশান থেকে বিমানবন্দর সড়কে নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে। পথে পথে জড়ো হয়েছেন হাজারো নেতাকর্মী। সুস্থ হয়ে দেশের রাজনীতিতে ফিরবেন বেগম জিয়া এমন প্রত্যাশা তাদের।

মঙ্গলবার রাত ৮টায় গুলশানের বাসা থেকে বের হয়ে বিমানবন্দরে পৌঁছে ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাত ১০টায় লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করবেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। মাঝে কাতারের রাজধানী দোহায় যাত্রাবিরতিতে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে দেশটির আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির।

খালেদা জিয়াকে লন্ডন বিমানবন্দরে স্বাগত জানাবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আর সফরের মধ্যে দিয়ে নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে দীর্ঘ ৭ বছর পর দেখা হতে যাচ্ছে মা খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার বড় ছেলে তারেক রহমানের।

এদিকে প্রিয় নেত্রীকে একনজর দেখতে রাজধানীর গুলশান-২ এবং বনানীর রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন হাজারো নেতাকর্মী। তাদের মিছিল-স্লোগানে উত্তাল গুলশান। সন্ধ্যার পর রাজধানীর গুলশান-বনানী এলাকা ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির এক মামলায় কারাবন্দি হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাকে রাখা হয় ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত ও নির্জন কারাগারে। কারাগারে থাকাকালে নানা রোগে আক্রান্ত হন বিএনপি নেত্রী। বারবার যেতে হয় হাসপাতালে।

আরও পড়ুন—

বৈষম্যবিরোধীদের সঙ্গে অন্য ছাত্র সংগঠনগুলোর দূরত্ব কী বাড়ছে?

আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরে জামিন ও মুক্তি না মেলায় প্রাণঘাতী করোনার প্রকোপে পরিবারের আবেদনে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার কারাবাসের ২ বছর একমাস ১৩ দিন পর শর্তসাপেক্ষে ৬ মাসের অস্থায়ী মুক্তি দেয় তাকে। শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ছয় মাস করে বাড়ছিল বেগম জিয়ার মুক্তির মেয়াদ।

এতদিন বাসা-হাসপাতাল, হাসপাতাল-বাসা এভাবেই কাটছিল বেগম জিয়ার জীবন। কয়েকদফায় দীর্ঘ সময় হাসপাতালে ভর্তি থাকতেও হয় তাকে। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা বিএনপি নেত্রীকে বিদেশ থেকে চিকিৎসক এনে দেওয়া হয় চিকিৎসা। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর কয়েকদফা তারিখ পরিবর্তন হলেও শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকায় কাতারের আমীরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডনে যাচ্ছেন বিএনপি নেত্রী। এই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে আইসিইউ সুবিধা ছাড়াও থাকছে তাৎক্ষণিক জীবন রক্ষার সব ধরনের সুবিধা।

আরও পড়ুন—

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করেছেন জিএম কাদের

লন্ডনে যাওয়ার আগে দেশবাসীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন চার বছর গৃহবন্দি থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, ম্যাডাম উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাচ্ছেন। দেশের মানুষ তাকে শুভেচ্ছা জানাতে বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। সবাই দোয়া করবেন ম্যাডাম যাতে দ্রুতই উন্নত চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে আসেন।

(ঢাকাটাইমস/০৭জানুয়ারি/জেবি/ইএস)