চলন্ত বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি:

মির্জাপুরে মামলা নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৩ ডাকাত গ্রেপ্তার

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৬:০২ | প্রকাশিত : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫:৫৭

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে চলন্ত বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনায় মামলা নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৩ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশ।

শুক্রবার বিকালে সাভার মডেল থানার গেন্ডা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গুপ্তচরের তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতি হওয়া তিনটি মোবাইল ফোন সেট, নগদ ২৯ হাজার ৩৭০ টাকা ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত ডাকাতরা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য।

শনিবার সকালে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান এসব তথ্য জানান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার লাউতারা গ্রামের মো. বদর উদ্দিন শেখের ছেলে মো. শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল ওরফে মুহিদ (২৯), শরীয়তপুরের জাজিরা থানার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের ইসমাইল মোল্লার ছেলে মো. সবুজ (৩০) ও ঢাকার সাভার থানার ৯ নম্বর ওয়ার্ড টান গেন্ডা গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে শরীফুজ্জামান ওরফে শরীফ (২৮)।

গ্রেপ্তারকৃত শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল ওরফে মুহিতের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থানায় একটি, ঢাকার সাভার মডেল থানায় একটি বাস ডাকাতি মামলাসহ পাঁচটি মামলা রয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত ডাকাত দলের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।

টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আহসান জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সবুজ ও শরীফ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন। অপর আসামি শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল ওরফে মুহিদকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন থাকায় তাকে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠানো হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাত ১.৪৫ মিনিট থেকে রাত ৪টা পর্যন্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ঢাকা-রাজশাহী পথের ইউনিক রোড রয়েলস্ পরিবহনের একটি বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। ঘটনার তিন দিন পর শুক্রবার ভোরে মির্জাপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা হয়। ডাকাতদের কবলে পড়া ওমর আলী নামের এক যাত্রী বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় মামলা করেন।

ওমর আলীর বর্ণনা মতে, সোমবার ১৭ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টার দিকে ঢাকার গাবতলী থেকে ইউনিক রোড রয়েলস্ পরিবহনের বাসটি ছেড়ে আসে। সাড়ে ১২টার দিকে ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের জিম্মি করে। পরে তারা কয়েকজনকে জখম করে ডাকাতি শুরু করে। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বাসটি বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি শেষে বাস থামিয়ে তারা নেমে যায়। ডাকাতরা বাস থেকে নেমে যাওয়ার পর চালক বাসটি নিয়ে গন্তব্যে যেতে অস্বীকৃতি জানান। পরে যাত্রীদের চাপের মুখে বাস নিয়ে যাত্রা শুরু করেন চালক। মঙ্গলবার বেলা ১১টার পরে যাত্রীরা বাসটি নাটোরের বড়াইগ্রাম থানায় নিয়ে যান। বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার পরে বাসটি বড়াইগ্রাম থানায় ঢোকানো হয়। এ সময় বাসের চালক বাবলু আলী, সুপারভাইজার সুমন ইসলাম ও তার সহকারী মাহবুব আলমকে আটক করে ৫৪ ধারায় মামলা দিয়ে আদালতে পাঠায় বড়াইগ্রাম থানা-পুলিশ। পরে তারা আদালতের মাধ্যমে জামিনে ছাড়া পান। এই বিষয়ে গত বুধবার একাধিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। অবশেষে ঘটনার তিন দিন পর মির্জাপুর থানা ডাকাতির ঘটনা নেয়ার পর তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

(ঢাকা টাইমস/২২ফেব্রুয়ারি/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :