বিচার ও পুলিশের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে: অ্যাটর্নি জেনারেল

৫ আগস্টের আগের পুলিশ বাহিনী আর পরের পুলিশ বাহিনী এক নয় বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। তিনি বলেছেন, ৫ আগস্টের পর পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলাও করেনি, তাদের হাত দিয়ে একটিও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়নি। বিচার ও পুলিশ বিভাগের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) যশোর পিটিআই মিলনায়তনে দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও পরিবেশের ওপর গুরুত্বসহ আইন প্রয়োগ বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব তথ্য জানান তিনি।

যশোর জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে কর্মশালায় অংশ নেন খুলনা ও বরিশাল বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ কমিশনার, ১৬ জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা ও দায়রা জজ, সিনিয়র জুডিশিয়াল ও মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, পাবলিক প্রসিকিউটর, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ওসিসহ ৩২০ কর্মকর্তা।

বিচার ও পুলিশ বিভাগের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে অ্যাটর্নি জেনালের বলেন, আগামীর বাংলাদেশ হবে সুশাসন ও ন্যায়বিচার ভিত্তিক। পুলিশকে তদন্তের সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, যাতে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি শাস্তি না পায়।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আমরা গর্বের সঙ্গে বলি ৫ আগস্টের আগের পুলিশ বাহিনী আর পরের পুলিশ বাহিনী এক নয়। ৬০ লক্ষাধিক মানুষের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা হয়েছিল। তার প্রায় সব কটির বাদী হয়েছিল পুলিশ। ৫ আগস্টের পর পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলাও করেনি।

‘৫ আগস্টের আগে সাতশর বেশি মানুষকে গুম করা হয়েছিল। বিনা বিচারে সাড়ে ৪ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ব্যবহার করে ৬০ লাখের বেশি গায়েবি মামলা করা হয়েছিল। এসব ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের সব উপাদানে ভরপুর। ৫ আগস্টের পর পুলিশ বাহিনীর হাতে একটিও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়নি।’ যোগ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল।

বিচারকদের উদ্দেশে মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘শহীদ মুগ্ধ মারা যাওয়ার পর কোনো হাসপাতাল তার লাশ নিতে চায়নি। তার পোস্টমর্টেম করা সম্ভব হয়নি। তার লাশ অ্যান্ট্রি করতে রাজি হয়নি প্রশাসন। মিডিয়া ঘটনাগুলো তুলে এনেছে। আমি বিনয়ের সঙ্গে বলছি, আপনি নতুন পুলিশ রিপোর্ট তৈরি করুন। আইনের স্বাভাবিক ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে প্রগতিশীল হওয়ার চেষ্টা করুন। ৫ আগস্টের আগের তত্ত্বে বিচার করলে হবে না। আপনাদের সামনে হাতছানি দিচ্ছে ইতিহাসের যুগসন্ধিক্ষণ।’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গণির সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার, সিআইডির অতিরিক্ত আইজি মতিউর রহমান শেখ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আতাউর রহমান খান।

(ঢাকাটাইমস/২২ফেব্রুয়ারি/মোআ)