গরমে স্বস্তি দেয় এসি, বিদ্যুৎ বিল কমানোর কৌশল

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫০

প্রকৃতিতে শুরু হয়েছে তীব্র তাপদাহ। গরমে শরীর ঠান্ডা রাখা খুব জরুরি। এই সময়ের তাপপ্রবাহ শরীরের ভীষণ ক্ষতি করে। গরমে স্বস্তি পেতে এসির জুড়ি নেই। গরমে শীতল হাওয়ার প্রশান্তির ছোঁয়া এনে দেয়। গরম থেকে স্বস্তি পেতে অনেকেই বাসায় এসি ব্যবহার করে থাকেন। অনেকে আবার নতুন করে এসি কেনার জন্য ধারণা নিচ্ছেন। তবে সবার মনে একটাই ভয় থাকে এসি ব্যবহারের কারণে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসবে। কিছু নিয়ম মেনে যদি আপনি এসি চালান তবে বিদ্যুৎ বিল কম আসবে। এসি যারা কিনছেন তাদের সচেতন হতে হবে অনেক বিষয়ে। আসুন জেনে নেই কিভাবে সঠিক নিয়মে এসি চালালে বিদ্যুৎ বিল কম আসবে। খরচ বাঁচবে অনেক।

হিউমিডিফায়ার

হিউমিডিফায়ার বাতাসে আর্দ্রতা বাড়াতে সাহায্য করে। পানিকে ছোট্ট ছোট্ট জলের ফোঁটা অথবা বাষ্পে পরিণত করে হিউমিডিফায়ার। যা এই যন্ত্রটি বাতাসে ছড়িয়ে দেয়। নানা ধরনের হিউমিডিফায়ার আজকাল বাজারে পাওয়া যায়।

এর মধ্যে অন্যতম হল কুল মিস্ট হিউমিডিফায়ার: একটি আল্ট্রাসনিক ভাইব্রেশন অথবা রোটেটিং ডিস্ক ব্যবহার করে এই ধরনের হিউমিডিফায়ার জলকে ছোট ছোট ফোঁটা বা ড্রপলেটে পরিণত করে।

ওয়ার্ম মিস্ট হিউমিডিফায়ার: এই ধরনের হিউমিডিফায়ার পানিকে গরম করে এবং সেটিকে বাষ্পে পরিণত করে।

ইভ্যাপোরেটিভ হিউমিডিফায়ার: এই ধরনের হিউমিডিফায়ার একটি ফ্যান বা পাখা ব্যবহার করে পানি ভর্তি ফিল্টারের মধ্যে দিয়ে বাতাস প্রবাহিত করার মাধ্যমে কাজ করে।

এসি-র পাশাপাশি হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করলে বাতাসের আর্দ্রতা ধরে রাখা সম্ভব হয়। খরচ বাঁচবে অনেক। ঘরের পরিবেশ আরামদায়ক এবং স্বাস্থ্যকর থাকে। নাক, ত্বক, চোখ এবং গলার শুষ্কতা প্রতিরোধ করে। ঠান্ডা লাগা এবং ফ্লু-র উপসর্গ কমে। শিশু এবং বয়স্কদের জন্য খুবই উপযোগী।

ইনভার্টার এসি ব্যবহার করুন

এসি কেনার আগে প্রতিটা ব্র্যান্ডে নতুন কি ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা নিলে ভালো ব্রান্ড বাছাই করা যাবে সহজেই। বিদ্যুৎ খরচে সাশ্রয় হবে। সেক্ষেত্রে ইনভার্টার কিনুন। ইনভার্টার এসির ব্যবহারে বিল কম আসে। ইনভার্টার এসির বড় সুবিধা হচ্ছে ইনভার্টার এসির কমপ্রেসর মোটরটি প্রয়োজনমতো নিজস্ব চলার গতি পরিবর্তন করতে পারে। ইনভার্টার এসিতে এমন একটি সেন্সর থাকে, যা ঘরের তাপমাত্রার ওপর নির্ভর করে কমপ্রেসর পুরোপুরি বন্ধ না করে, মোটরটির চলার গতি কমিয়ে দেয়। এর কারণেই বিদ্যুৎ খরচ কমে আসে, যা পরিবেশবান্ধব। পিক আওয়ারে (বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১টা) বিদ্যুৎ ব্যবহার না করে অফ-পিক আওয়ারে যেকোনো বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার বিল কমানোর একটি কার্যকর কৌশল।

এসি অন করার আগে দরজা-জানলা খুলে রাখুন

এসি চালানোর কিছুক্ষণ আগে অল্প কিছু সময়ের জন্য আপনার ঘরের সমস্ত দরজা-জানলা খুলে দিন এবং পাখাটাও চালিয়ে দিন। এই দুটি কাজ করে রাখলে, আপনার ঘরের ভেন্টিলেশন প্রক্রিয়া আরও ভাল হবে এবং গরমে যে ঘর তেতে থাকে, সেই হিটও বেরিয়ে যেতে পারবে। পাশাপাশি এই কাজ করে রাখলে, এসি তার কুলিং সিস্টেম তাড়াতাড়ি চালু করতে সক্ষম হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০ মিনিট ধরে ঘরের জানলা-দরজা খুলে, পাখা চালিয়ে রাখুন। পরে যখন দরজা-জানলা বন্ধ করে আবার এসি চালাবেন, তখন ঘরটি ঠান্ডা করতে আপনার এসি মাত্র আধ ঘণ্টা বা তারও কম সময় নেবে।

এসি-র সঠিক তাপমাত্রা সেট করুন

এসি অন করে তার তাপমাত্রা অন্তত ২০ মিনিটের জন্য ১৬ ডিগ্রিতে কুইক কুল মোডে রাখুন এবং তারপরে সেটিকে ২৫ ডিগ্রিতে সেট করুন। এমনটা করলেও ইলেকট্রিক বিল কম আসবে। ব্যুরো অফ এনার্জি এফিশিয়েন্সি-র একটি গবেষণা অনুযায়ী, এসি-র তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রিতে রাখা সবথেকে ভাল। কারণ, এই তাপমাত্রা মানব শরীরের জন্য স্বস্তিদায়ক। শুধু তাই নয়। রিসার্চে আরও বলা হচ্ছে, এসি-র তাপমাত্রা যত বাড়ানো হয়, প্রতি ডিগ্রিতে ৬ শতাংশ করে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়। তাই আপনার এসি ১৮ ডিগ্রির পরিবর্তে ২৫ ডিগ্রিতে চালিয়ে রাখলে ইলেকট্রিক বিল অনেকটাই বাঁচাতে পারবেন।

এসি চালিয়ে টাইমার সেট করে দিন

বেশির ভাগ এসি মডেলেই রয়েছে টাইমার সেট করে রাখার সুবিধা। টাইমার সেট করে রাখার অর্থ হল, এটি নির্দিষ্ট সময়ে আপনার এসির স্যুইচ অফ করে দিতে পারে এবং তাতে আখেরে বিদ্যুৎ খরচ সামান্য হলেও কম করা যায়। বেশির ভাগ মানুষই রাতে ঘুমানোর সময় এসি চালিয়ে টাইমার সেট করে রাখেন, যাতে একটা নির্দিষ্ট সময় পরে মেশিনের কম্প্রেসর বন্ধ হয়ে যায় এবং ইলেকট্রিক বিলও কম করা যায়।

ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস বন্ধ রাখুন

ঘরে টিভি, ফ্রিজ ও অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস থাকলে তা থেকে তাপ নির্গত হয়। রাতে এসি চালানোর আগে এই ধরনের ডিভাইস বন্ধ করে রাখলে কম বিদ্যুৎ খরচ হবে।

নিয়মিত ফিল্টার পরিষ্কার করুন

অনেক দিন ধরে ব্যবহার করার ফলে এসি-র ফিল্টারে অনেক ময়লা, ঝুল জমে থাকে। বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে ফিল্টার পরিষ্কার রাখা জরুরি। ১০ দিন অন্তর অন্তর করলে খুব ভাল হয়।

ঘরে মোটা পর্দা লাগান

ঘরের তাপমাত্রা যত বেশি হবে কুলার বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের ঘর ঠান্ডা করতে তত বেশি সময় নেবে। সে ক্ষেত্রে বেশি সময় ধরে এসি চালানোর প্রয়োজন পড়ে। বিলও বাড়তে থাকে চড়চড় করে। ঘরে মোটা পর্দা লাগালে বাইরের গরম হাওয়া ও আলো কম আসবে। ফলে ঘরও তাড়াতাড়ি ঠান্ডা হবে।

ঠিক সময়ে এসি সার্ভিসিং

এমন কোনও নিয়ম নেই যে, এয়ার কন্ডিশনার আপনাকে বছরে একবারই সার্ভিসিং করতে হবে। আপনি যদি এমন কোনও এলাকায় বাসবাস করেন, যেখানে ধূলোবালি থেকে সৃষ্ট নোংরার পরিমাণ একটু বেশি, সেরকম জায়গায় দুই থেকে তিন মাস অন্তর এসি সার্ভিসিং করানো অত্যন্ত জরুরি। এমনটা করতে পারলে আপনার এসি যেমন ঠান্ডাও ভাল হবে, তেমনই আবার ইলেকট্রিক বিলও একটু সাশ্রয় করতে পারবেন। এসি খুব বেশি পুরনো হয়ে গেলে তা চালানো ঠিক নয়। কারণ পুরনো এসিগুলো নতুনের মত খুব বেশি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হয় না।

(ঢাকাটাইমস/৭ এপ্রিল/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

তথ্যপ্রযুক্তি এর সর্বশেষ

পরিবেশ রক্ষায় জাপানের যুগান্তকারী প্লাস্টিক আবিষ্কার

৩০ জুন পর্যন্ত রাতের আকাশে গ্রহ-তারাসহ দেখা মিলবে যেসব মহাজাগতিক চমক

ঘরে বসে জাতীয় পরিচয়পত্রের অসুন্দর ছবিটি ৩০ মিনিটেই বদলাবেন যেভাবে

কত কিলোমিটার চালানোর পর মোটরবাইকের মোবিল বদলাবেন

জিমেইলে নতুন সুবিধা চালু, বড় ইমেইল থ্রেডকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সারসংক্ষেপ করবে

যে নিয়মে এসি চালালে বিদ্যুৎ বিল কম আসবে

অবশেষে বাংলাদেশে চালু হতে যাচ্ছে ‘গুগল পে’

বাংলাদেশিদের বিনামূল্যে ড্রোন প্রশিক্ষণের সুযোগ দিচ্ছে চীন

‘শুরুটা কঠিন ছিল, কিন্তু থেমে যাইনি’

১৮৪ মিলিয়ন পাসওয়ার্ড ফাঁস! বিরাট ঝুঁকিতে অ্যাপল, ফেসবুক, গুগলসহ বহু প্রতিষ্ঠানের তথ্য

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :