অনিয়ম-অবহেলা ও সংকটে চলছে ডামুড্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনিয়ম ও চিকিৎসক সংকট যেন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। রোগীরা অফিস সময়ে ঠিক মতো চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ বিস্তর। তবে যে কয়জন চিকিৎসক রয়েছেন তারাও দিনের বেশির ভাগ সময়ে বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখেন। ফলে চিকিৎসক সংকট ও তাদের বাইরে রোগী দেখায় চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ রোগীরা।

রোগীর স্বজন ও স্থানীয়দের অভিযোগ, ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজনীয় ওষুধ, যন্ত্রপাতি ও জনবল না থাকাসহ চিকিৎসকদের অনিয়ম ও অবহেলার কারণে সঠিক চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না সাধারণ রোগীরা। দৈনিক ওষুধ সরবরাহের তালিকায় রোগীদের ওষুধ দেওয়ার বিধান থাকলেও তেমন কোনো ওষুধই দেওয়া হয় না।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অভিযোগ, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে হাসপাতালের চিকিৎসকদের সখ্যতা থাকায় কমিশনের বিনিময়ে তাদের ওষুধ প্রেসক্রিপশনে লিপিবদ্ধ করে থাকেন। এছাড়া হাসপাতালে শিডিউল অনুসারে রোগীদের খাবার দেওয়া হয় না। রোগী ও তার স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে হাসপাতালটির স্টাফরা।

গত কয়েকদিন ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে রোগী সিটে থাকলেও অধিকাংশ চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফরা ছিলেন অনুপস্থিত। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আসতে থাকেন চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফরা। হাসপাতালে দীর্ঘ সময় অপেক্ষমাণ চার-পাঁচ মাসের শিশুদের কোলে নিয়ে চিকিৎসাসেবা পাওয়ার আসায় বসে আছেন মায়েরা। তবে হাসপাতালে অপেক্ষমাণ রোগীর চেয়ে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের উপস্থিতি বেশি লক্ষ্য করা যায়।

পূর্ব ডামুড্যা থেকে হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসা রাসেল শিকদার নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমার শিশু সন্তান নিয়ে দুদিন ধরে বসে আছি। প্রয়োজনীয় ওষুধ পাচ্ছি না। হাসপাতালে খাবার-দাবারের মানও ভালো না। চিকিৎসকরা ঠিক মতো আসেন না রোগীর কাছে। নার্স ও আয়ারাও ভালো ব্যবহার করেন না। সবকিছু বাহির থেকে কিনে আনতে হয়। বিভিন্ন পরীক্ষাও করাতে হয় ক্লিনিক থেকে।’

ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাহ্ আলম সিদ্দিকীর কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে কিছুটা দালালের দৌরাত্ম্য আছে। তবে সিকিউরিটি গার্ড না থাকায় সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট প্রকট রয়েছে তাই রোগীদের চিকিৎসা দিতে একটু সমস্যা হয়। তবে তার অধিকাংশ সময়ে কার্যালয়ে না থাকাসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও অবহেলার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।’

এসব অভিযোগের ব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. রেহান উদ্দিন বলেন, ‘অফিস টাইমে বাইরে চিকিৎসকরা রোগী দেখার বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

(ঢাকা টাইমস/৩০মে/এসএ)