প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠক দেশের গণতন্ত্রের জন্য সুসংবাদ: মির্জা ফখরুল

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠকে সংসদ নির্বাচন পেছানো বার্তাকে ‘দেশের গণতন্ত্রের জন্য সুসংবাদ’ বলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠকের পর শুক্রবার বিকালে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আজকে জাতির অনেক প্রতীক্ষিত একটি সুসংবাদের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যে বৈঠকটি প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে অনুষ্ঠিত হয় প্রায় দুই ঘণ্টার এই বৈঠক নিয়ে গোটা জাতি উৎকন্ঠা সঙ্গে অপেক্ষা করছিল এবং সবাই অপেক্ষা করছিলে যে, আমি যে কথাটি আগেই বলেছিলাম এই বৈঠকটি টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে।
আল্লাহর কাছে অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি যে, সত্যিকার অর্থেই এই বৈঠকটি একটা টানিং পয়েন্টে পরিণত হয়েছে। আমরা লক্ষ্য করলাম বৈঠকের পরেই একটা যৌথ ঘোষণা দেয়া হয়েছে যে ঘোষণায় বলা হয়েছে, আমাদের দুই নেতার বৈঠকটি ছিল অত্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ ও সুন্দর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়। যে বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে তার মধ্যে প্রধান ছিল নির্বাচন ইস্যু। সেই নির্বাচন ইস্যুতে তারেক রহমানের যে প্রস্তাব, এপ্রিলের যে নির্বাচন ঘোষণা করা হয়েছে সেটা উপযুক্ত সময় নয় বিধায় তাকে পিছিয়ে নিয়ে আসা। সেই সেক্ষেত্রে গোটা জাতি আনন্দের সাথে লক্ষ্য করল যে, প্রধান উপদেষ্টা এটাতে (নির্বাচন পেছানো) সম্মত হয়েছেন তারা ফেব্রুয়ারি মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এর মাধ্যমে তারেক রহমান আবার প্রমাণ করলেন তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক যে দলগুলো রয়েছে সেই দলগুলোর নেতৃত্ব যারা দিচ্ছেন তাদের মধ্যে নিসন্দেহে রাষ্ট্রনায়কোচিত যে গুণগুলো তার মধ্যে রয়েছে সেটা তিনি প্রমাণ করেছেন।
প্রথম একটি বৈঠকে যেটা গোটা জাতি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ছিলো, সেই বৈঠকটিতে তিনি আল্লাহর রহমতে সফল হয়েছেন। আমি আমার দলের পক্ষ থেকে সকল নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে এই সভাটিতে তারেক রহমানকে আমন্ত্রণ জানিয়ে একটা যে স্টেলমেন্ট ছিল, একটা যে সব কিছু অনিশ্চিত অবস্থায় চলে গিয়েছিল সেই অবস্থা থেকে কাটিয়ে তিনি এবং তারেক রহমান এই দুই নেতা আবার সামনের দিকে আশা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন।
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠকের পরপরই গাড়িতে উঠেই তারেক রহমান প্রথম টেলিফোনে মহাসচিবের সাথে কথা বলেন। এরপর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে উপস্থিত গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, চতুর্দিকে একটা অনিশ্চিয়তা ছিল। অনেকে অনেক কথা বলছিলেন। আজকে দুই নেতা প্রমাণ করলেন যে, বাংলাদেশের মানুষ এখনো প্রয়োজনের সময়ে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে এবং নেতারা নেতৃত্ব দিতে পারেন।
‘জাতীয় ঐক্যকে আরও দৃঢ় করতে হবে’
মির্জা ফখরুল বলেন, অতীতে যেসমস্ত ছোটখাটো কথা-বার্তা হয়েছে সেগুলোকে ভু্লে গিয়ে সামনের দিকে জাতীয় ঐক্যকে আরও দৃঢ় করে এবং যেটা বলা হয়েছে সমস্যাগুলোকে সমাধান করে নিয়ে আমরা যেন অতিদ্রুত একটা নির্বাচন যেটা বলা হয়েছে যে, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে সেই নির্বাচনে সুষ্ঠু ভাবে যেতে পারি এবং জাতির যে আকাংখা সেটা পুরুণ করতে পারি এবং ১৫ বছরেরে এই ফ্যাসিস্টদের ধবংস করা ধবংসস্তুপের মধ্যে যে কাঠামো সেই কাঠামোকে নতুন করে একটা গণতান্ত্রিক কাঠামোতে রুপান্তরিত করতে পারি।
এই বিষয়টা সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ আমরা প্রায় ১৫ বছর পরে গণতন্ত্রের উত্তরণে আমরা একটা সুযোগ পাচ্ছি… ট্রানজিশন টু ডেমোক্রেসি সেই পথে আমরা নিশ্চিত এগিয়ে যাচ্ছি।
গত ১৫ বছরে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামে জীবনদানকারী নেতা-কর্মী ও জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে আত্মত্যাগকারীদের সকল শহীদ এবং দলের নেতা-কর্মীসহ দেশবাসীর প্রতি তারেক রহমান কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বৈঠকের পর আমাদের সাথে উনার কথা হয়েছে। উনি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছি। একই সঙ্গে তিনি অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে তার মাতা আমাদের দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কর্তৃজ্ঞতা জানিয়েছেন, শ্রদ্ধা জানিয়েছেন এবং তাকে সঠিক দিক নির্দেশনা দিয়েছেন।
‘গণতন্ত্র একটি দিনের বিষয় নয়’
মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র একটা দিনের ব্যাপার নয়। গণতন্ত্র হচ্ছে একটা চর্চার বিষয় এটা একটা কালচার সেই কালচার আমাদের মধ্যে গড়ে তুলতে হবে। সারাক্ষণ আমাদের মধ্যে বকাবকি, গালিগালজ, সোশ্যাল মিডিয়াতে বকাবকি, ওমুকখানে বকাবকি না করে আসুন আমরা সবাই একসাথে একযোগে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে আমরা দেশকে পূনর্গঠনের জন্য নতুন বাংলাদেশ গঠন করবার জন্য এগিয়ে যাই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বপ্ন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার স্বপ্ন ও আমাদের নেতা তারেক রহমানের স্বপ্ন, যেসমস্ত শহীদরা প্রাণ দিয়েছেন তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করি।
এই তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া জানানোর সময়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন, যুগ্ম মহাসচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মিডিয়া সেলের আতিকুর রহমান রুমন, শায়রুল কবির খান, চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন নসু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
(ঢাকা টাইমস/১৩জুন/জেবি/এসএ)
সংবাদটি শেয়ার করুন
রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
রাজনীতি এর সর্বশেষ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক বয়কট জামায়াতের

তারেক রহমান ও ড. ইউনূসের বৈঠক নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সন্তোষ

দ্বিতীয় ধাপে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা আজ

‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সংহতি প্রকাশ

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পেতে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন: ফখরুল

দেশের মানুষ উন্মুখ হয়ে আছে, কখন তারা ভোট দেবে: মঈন খান

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত ইসিকে জানাতে সরকারের প্রতি আহ্বান সালাহউদ্দিনের

মির্জা ফখরুলের সঙ্গে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের বৈঠক

সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বহুদলীয় গণতন্ত্রের মৌলিক উপাদান: তারেক রহমান
