ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে পাঠানো হচ্ছিল বাংলাদেশিদের, মানব পাচারকারী চক্রের মূলহোতা গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ১৩ জুন ২০২৫, ২৩:০১

বিদেশে ভালো বেতনে চাকরির লোভ দেখিয়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে সাধারণ মানুষকে মানব পাচারের মাধ্যমে যুদ্ধের ময়দানে ঠেলে দেওয়ার ভয়াবহ চক্রের মূলহোতাকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। গ্রেপ্তারকৃত আসামির নাম, মুহাম্মদ আলমগীর হোছাইন। তার বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগড়ায়।

বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সিআইডির মানব পাচার প্রতিরোধ শাখা (টিএইচবি)।

শুক্রবার সন্ধ্যায় সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানায়, এই প্রতারক চক্রের সদস্যরা রাশিয়ায় মাসে ২ থেকে ২.৫ লাখ টাকা বেতনের চকলেট ফ্যাক্টরি, ক্লিনার বা বাবুর্চির চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে ভিকটিমদের ওমরাহ ভিসায় সৌদি আরব পাঠাতো। সেখানে ওমরাহ করিয়ে তাদের রাশিয়ায় নিয়ে গিয়ে এক ‘সুলতান’-এর কাছে বিক্রি করে দেওয়া হতো। এরপর ওই ‘সুলতান’ তাদেরকে দাস হিসেবে রুশ সেনাদের কাছে হস্তান্তর করত।

রুশ বাহিনীর কাছে হস্তান্তরের পর ভিকটিমদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধের ময়দানে পাঠানো হতো। তবে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হতো বলে অভিযোগ রয়েছে।

সিআইডি জানায়, এই চক্রের ফাঁদে পড়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিয়ে নাটোরের সিংড়া থানার হুমায়ুন কবির নিহত এবং কেরানীগঞ্জের আমিনুল গুরুতর আহত হন।

তাদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত ভিকটিমদের একজন নরসিংদীর পলাশ থানার আকরাম হোসেন। তিনি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থেকে পালিয়ে গত ২৬ জানুয়ারি নিজ ব্যবস্থাপনায় দেশে ফেরেন। তিনি ফিরে এসে আহত আমিনুলের স্ত্রীসহ অন্যান্য ভুক্তভোগীদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার কাছ তথ্য পেয়ে যুদ্ধাহত আমিনুলের স্ত্রী (ঝুমু আক্তার) বনানী থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন ৬/৭/৮/৯ রুজু করেন। এ মামলার গত বুধবার আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার বনানী থানায় দায়ের করা মানব পাচার দমন আইনের মামলায় আলমগীরকে আদালতে হাজির করলে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে সিআইডি।

সিআইডি আরও জানায়, একই কৌশলে পাঠানো আরও একটি ১০ সদস্যের দল সৌদি আরবে আটকে আছে। রাশিয়ায় যেতে অস্বীকৃতি জানানোয় তাদের পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে। ফলে তারা কাজও পাচ্ছে না, দেশে ফিরতেও পারছে না।

পূর্বে গ্রেপ্তার এক নারী পাচারকারী

এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে নেপাল পালানোর সময় একই চক্রের আরেক সদস্য ফাবিহা জেরিন তামান্নাকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ড্রীম হোম ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস লিমিটেডের অংশীদার ছিলেন।

সিআইডির অভিযান ও সতর্ক বার্তা

সিআইডি জানিয়েছে, ভিকটিমদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। একই সঙ্গে এই মানব পাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে তদন্ত ও গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত থাকবে।

বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান বলেন, চাকরির নাম করে সাধারণ মানুষকে যুদ্ধের ময়দানে ঠেলে দেওয়ার মতো ভয়াবহ প্রতারণা আমরা কঠোরভাবে দমন করবো। মানব পাচার চক্র নির্মূলে সিআইডির অভিযান চলমান থাকবে।

(ঢাকাটাইমস/১৩জুন/এলএম/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অপরাধ ও দুর্নীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অপরাধ ও দুর্নীতি এর সর্বশেষ

কেরানীগঞ্জ কারাগারে হত্যা মামলার আসামির আত্মহত্যা

বিপুল ইউরিয়া সার ও রয়েল টাইগারসহ ৬ পাচারকারী আটক

সবুজবাগে ব্যবসায়ীকে হত্যার পর তিন টুকরো করে বালু চাপা, গ্রেপ্তার ১

রূপগঞ্জে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়িয়ে নিতে গুলি, যুবদল কর্মী নিহত

জেনেভা ক্যাম্পের এক ফার্মেসিতে মিলল প্রায় আড়াই কোটি টাকা, যা জানা গেল

টিউলিপের আয়কর নথি জব্দ করেছে দুদক

‎মোহাম্মদপুরে অস্ত্রের মুখে গরু ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা সাবেক কাউন্সিলরের, থানায় অভিযোগ 

সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেলের স্ত্রী এমা ক্লেয়ারের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

ব্যাংকের কাস্টমার কেয়ারের কর্মকর্তা পরিচয়ে টাকা আত্মসাৎ, প্রতারক গ্রেপ্তার

৬৪৫ কোটি টাকা আত্মসাত: নগদের সাবেক এমডি তানভীরসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :