তিব্বতে ভূমিকম্পে কয়েক ডজন নিহত, আর যেসব অঞ্চলে আঘাত হেনেছে

তিব্বতের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর শিগাৎসের কাছে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর কয়েক ডজন লোক নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। চীনা ও মার্কিন পর্যবেক্ষণ গোষ্ঠীর মতে, নেপালে কয়েকশ কিলোমিটার দূরে কম্পন অনুভূত হয়েছিল। খবর আল জাজিরার।
চায়না আর্থকোয়াক নেটওয়ার্ক সেন্টার বলছে, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৫ মিনিটে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে, যার উৎপত্তি স্থলের গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার (৬.২ মাইল), মাত্রা ৬.৮। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার বলছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭.১।
৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্প শক্তিশালী এবং মারাত্মক ক্ষতি করতে সক্ষম বলে মনে করা হয়। ভূমিকম্পের একাধিক আফটারশকও হয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে বড় ৪.৪ মাত্রা ছিল।
চীনের সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, ভূমিকম্পে শিগাৎসের পার্শ্ববর্তী টিংরি কাউন্টিতে তিনটি টাউনশিপ- চাংসুও, কুলুও এবং কুওগুও-তে নয় জন নিহত হয়েছে, যেখানে অনেক ভবন ধসে পড়েছে। স্থানীয় মিডিয়ার রিপোর্ট বলছে, কয়েক ডজন লোক মারা গেছে বলে জানা গেছে।
বেইজিং থেকে রিপোর্ট করা আল জাজিরার ক্যাটরিনা ইউ বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে বেরিয়ে আসা ছবিতে অনেকগুলো ধসে পড়া ভবন ও বাড়িঘর দেখা যাচ্ছে।
“এগুলো পার্বত্য অঞ্চলের খুব প্রত্যন্ত গ্রাম যেখানে প্রবেশ করা কঠিন এবং এখন শীতকাল, খুব ঠান্ডা এবং কোনো বড় শহরের খুব কাছাকাছি না হওয়ায় সেই অসুবিধাটি বাড়েতে পারে,” ইউ বলেছিলেন।
“এখন পর্যন্ত, আমরা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যে সংখ্যা পেয়েছি তাতে ৩৬ জন নিহত এবং ৬৮ জন আহত হয়েছে। সংখ্যাটি বাড়ার আশঙ্কা আশঙ্কা করছি,” তিনি বলেন।
রয়টার্স বলেছে, শিগাৎসে শহরের প্রায় ১৫০ কিলোমিটার (৯৩ মাইল) পূর্বে অবস্থিত লাৎসেতে একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ভাঙা দোকানের ধ্বংসাবশেষ রাস্তার উপর ছড়িয়ে পড়েছে।
শিগাৎসে হলো তিব্বতের পবিত্রতম শহরগুলোর মধ্যে একটি এবং তিব্বতি বৌদ্ধধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব পঞ্চেন লামার আসন, যার আধ্যাত্মিক কর্তৃত্ব দালাই লামার পরেই দ্বিতীয়।
প্রায় ৪০০ কিমি (২৪৮ মাইল) দূরে উত্তর ভারতের বিহার রাজ্যে এবং নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতেও শক্তিশালী কম্পন অনুভূত হয়েছে, যেখানে ভবনগুলো কেঁপে উঠলে বাসিন্দারা তাদের বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় বলে জানা গেছে।
মাউন্ট এভারেস্টের কাছে নেপালের হিমালয় অঞ্চলে লোবুচের আশেপাশের অঞ্চলগুলিও কম্পন এবং পরপর ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে।
এভারেস্টের কাছে অবস্থিত নেপালের নামচে অঞ্চলের একজন সরকারি কর্মকর্তা জগৎ প্রসাদ ভুসাল বলেছেন, “এখানে বেশ প্রবলভাবে কেঁপেছে, সবাই জেগে আছে, কিন্তু আমরা এখনো কোন ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে জানি না।”
একজন স্থানীয় কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত নেপালে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি, যদিও ভূমিকম্পের প্রভাব সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীকে একত্রিত করা হয়েছে।
নেপাল এবং চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে প্রায়ই ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
সিসিটিভি অনুসারে, গত পাঁচ বছরে শিগাৎসে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের ২০০ কিলোমিটারের (১২৪ মাইল) মধ্যে ৩ বা তার বেশি মাত্রার ২৯টি ভূমিকম্প হয়েছে, যার সবকটিই সাম্প্রতিক সময়ের তুলনায় ছোট ছিল।
২০০৮ সালে চীনের সিচুয়ান প্রদেশে একটি বিশাল ভূমিকম্পে প্রায় ৮০ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল।
২০১৫ সালে একটি ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প কাঠমান্ডুর কাছে আঘাত হানে, যা নেপালের সবচেয়ে খারাপ ভূমিকম্প ছিল। এতে প্রায় নয় হাজার মানুষ মারা যায় এবং হাজার হাজার আহত হয়।
(ঢাকাটাইমস/০৭জানুয়ারি/এফএ)
সংবাদটি শেয়ার করুন
আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

দেশটির সর্বোচ্চ নেতা খামেনি কোথায় আছে জানে যুক্তরাষ্ট্র, আপাতত হত্যা নয়: ট্রাম্প

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত, প্রথমবারের মতো মুখ খুললেন চীনা প্রেসিডেন্ট

ইসরায়েল ইরানের সক্ষমতা বুঝতে ভুল করেছে

ইরানে একদম শেষ করে দেওয়া দেখতে চান ট্রাম্প

ইরান পরমাণু অস্ত্রের কাছাকাছি ছিল না—যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা মূল্যায়ন

ইসরায়েলে মোসাদের কার্যালয়ে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত

ইরানের আইআরজিসির আরেক শীর্ষ কমান্ডারকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের

ঝুঁকিতে তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাস

আবারও এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি, কলকাতা বিমানবন্দরে আটকে গেল ফ্লাইট
