আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে স্থানীয় নির্বাচন দিন: নুর

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, ৬ মাস যাবত স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি নেই, জনগণের ভোগান্তি হচ্ছে। আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে স্থানীয় নির্বাচন দিন। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন একটা ভালো পদক্ষেপ হতে পারে। এতে প্রশাসনের ফিটনেসও বুঝা যাবে।
শুক্রবার বিকালে গণহত্যার বিচার ও গণহত্যাকারীদের রাজনীতি নিষিদ্ধে দাবিতে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর আয়োজিত বিক্ষোভ ও গণমিছিলে তিনি এসব কথা বলেন। গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে গণমিছিল শুরু করে নাইটিংগেল মোড়, ফকিরাপুল মোড়, দৈনিক বাংলা মোড় ঘুরে পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয় ও গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
নুর বলেন, ভোট ও নির্বাচন নিয়ে অনেকের যতো কথা শোনা যায়, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে তত আওয়াজ শোনা যায় না। অন্যান্য রাজনৈতিক দলকেও আওয়ামী লীগের প্রশ্নে আমরা অবস্থান পরিষ্কার করার আহ্বান জানাই। আর গণঅভ্যুত্থানের ৬ মাস পরও কেন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে আমাদের রাজপথে নামতে হবে? এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা প্রশাসনে, যারা গ্রেপ্তার হচ্ছে তাদের মুক্তি ও জামিনের জন্য গণঅভ্যুত্থানের শরিকদের অনেকেই সুপারিশ করছে, দলভারী করতে দলে ভেড়াচ্ছে। স্পষ্টত গত ৬ মাসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে গণঅধিকার পরিষদ কোন আপোষ করবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ জাতির দুর্ভাগ্য যে তার সাহসী সন্তানেরা রাজপথে লড়াই করে নতুন ইতিহাস তৈরি করে আর সুবিধা ভোগ করে গুটিকয়েক মানুষ। এবার আর আমরা তা হতে দেবো না। রাষ্ট্র সংস্কার ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ না হলে এই গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হবে। তাই জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে অবশ্যই রাষ্ট্র সংস্কার করতে হবে। রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন বন্ধে ফ্যাসিবাদের আমলে দুর্নীতি ,লুটপাট ও অর্থপাচারসহ যারা ফ্যাসিবাদের সহযোগী ছিল তাদেরও বিচার করতে হবে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে উপদেষ্টা পরিষদের পুনর্গঠন করতে হবে। গণঅভ্যুত্থান প্রকৃত অংশীজনদের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করে সংস্কারের প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
তিনি আরও জানান, গত ৫ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে গণঅধিকার পরিষদ ডিসিদের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে। ১২ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধসহ গণহত্যা ও ফ্যাসিবাদের আমলে ১৬ বছরের লুটপাটের বিচারের দাবিতে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ চলবে, ১৯ ফেব্রুয়ারি জেলায় জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি হবে।
দলের সম্পাদক রাশেদ খাঁন বলেন, ক্ষমতায় এসে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব ছিল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা। কিন্তু ৬ মাসেও তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করলে জনগণ ক্ষমা করবে না। জাতিসংঘের রিপোর্টে উঠে এসেছে শেখ হাসিনার নির্দেশনায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগ একসঙ্গে গণহত্যা চালিয়েছে। এই রিপোর্টের পর আ.লীগকে নিষিদ্ধ করা ও গণহত্যার বিচার করার গ্রাউন্ড তৈরি হয়েছে। আমরা গত ৫ ফেব্রুয়ারি ৬৪ জেলার ডিসির মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর গণহত্যার বিচারে স্মারক লিপি প্রদান করেছি৷ স্পষ্ট কথা, আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে আওয়ামীলীগকে নিষিদ্ধ না করলে যমুনা ঘেরাও করা হবে। এখনও জুলাই আন্দোলনে আহতদের আত্মচিৎকার, শহীদ পরিবারের আহাজারি চলছে। শহীদ পরিবার ও আহতদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
তিনি বলেন, সরকার অপারেশন ডেবিল হান্ট শুরু করেছে, তবে এর আগেই হাসিনা, কাদের পালিয়েছে। রাঘববোয়ালরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। গ্রামগঞ্জে লুঙ্গি পরা নিরীহ আ.লীগকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বড় নেতাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে রেখে আওয়ামী লীগের পাতি নেতাদের গ্রেপ্তার করলে এই ডেভিল হান্ট সফল হবে না। ভারতের সঙ্গে বন্দি চুক্তির আওতায় শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরকে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে। শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে গণহত্যার বিচার না করলে আপনাদের জনগণ ক্ষমা করবেনা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের নিয়োগ, প্রমোশনে স্বচ্ছতা দেখাতে পারেনি সরকার৷ অভিযোগ আছে টাকার বিনিময়ে নিয়োগ, প্রমোশন হচ্ছে। যদি এই রাষ্ট্রের ন্যূনতম সংস্কার করা না যায়, তাহলে শহীদের সাথে বেইমানি করা হবে। রাষ্ট্র সংস্কারে আগে এই একপাক্ষিক উপদেষ্টা পরিষদের সংস্কার করে বিপ্লবে অংশগ্রহণকারী সবার প্রতিনিধিদের সমন্বয় উপদেষ্টা পরিষদের পুনর্গঠন করতে হবে। একজন ব্যক্তি ২টি মন্ত্রণালয় চালাচ্ছে, এভাবে রাষ্ট্র সংস্কার হয়?
দলের সহ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, গণঅধিকার পরিষদ কোনো অপশক্তির কাছে মাথানত করে না। স্বৈরাচার হাসিনার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল গণঅধিকার পরিষদ। বাংলাদেশে নব্য কোনো স্বৈরাচার জন্ম হতে দিবো না। আগামী তে গণঅধিকার পরিষদ একক ভাবে ৩০০ আসনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করবে।
বিক্ষোভ ও গণমিছিলে সভাপতিত্ব করেন গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দীন, সঞ্চালনা করেন মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, আরিফ তালুকদার, মাহফুজুর রহমান, মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ নেওয়াজ খান বাপ্পী প্রমুখ।
(ঢাকাটাইমস/১৪ফেব্রুয়ারি/জেবি/এমআর)
সংবাদটি শেয়ার করুন
রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
রাজনীতি এর সর্বশেষ
দিনে বিএনপি রাতে আ.লীগ করেছে এমন লোকদের সদস্য পদ নবায়ন হবে না: আমিনুল হক

এক মাস আগেই জানিয়েছিল ঢাকাটাইমস- গুলশানে প্রস্তুত হচ্ছে তারেক রহমানের বাড়ি

বিগত সরকার পরিকল্পিতভাবে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে: মঈন খান

জুলাই সনদ, সংস্কার ও গণহত্যাকারীদের বিচার দৃশ্যমানের পর নির্বাচন: সেলিম উদ্দিন

‘বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টি’র আত্মপ্রকাশ শুক্রবার

স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়া

এনসিসি গঠন ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইলেকট্রোরাল কলেজ গঠনে এবি পার্টি সম্মত

ত্যাগী পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ মূল্যায়ন করবে বিএনপি: আমিনুল হক

যেদিন হাসিনা পালিয়েছেন, সেদিনই আওয়ামী লীগ বিলুপ্ত: রাশেদ খান
