বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব মনে করেন না নাহিদ

দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও পুলিশিং ব্যবস্থায় একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হবে বলে মনে করেন না সদ্য আত্মপ্রকাশ করা নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম।

তিনি বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার এখনো পুরোপুরি জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি এবং ‘জুলাই বিপ্লবের প্রোক্লেমেশন’ নিয়েও মতৈক্য হয়নি। এক মাসের মধ্যে এটি না হলে নির্বাচন বিলম্ব হবে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন এনসিপি-প্রধান, যিনি দলের নেতৃত্ব নেওয়ার জন্য সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পদ ছেড়েছেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ইতিমধ্যে বলেছেন, সংস্কার দ্রুত শেষভ হলে ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এনসিপিপ্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর কোনো সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এটি তার প্রথম সাক্ষাৎকার।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘গত সাত মাসে আমরা সবাই আশা করেছিলাম, স্বল্পমেয়াদি সংস্কারের মাধ্যমে পুলিশিং ব্যবস্থা, আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যাবে। এটা একটা মাত্রায় ঘটেছে, কিন্তু আমাদের প্রত্যাশামতো হয়নি।’

এনসিপিপ্রধান বলেন, ‘বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও পুলিশিং ব্যবস্থায় আমি মনে করি না, একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হবে।’

রয়টার্স বলছে, নাহিদই প্রথম রাজনীতিক, যিনি নির্বাচন আয়োজন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া সময়সীমা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করলেন।

রয়টার্সের এই সাক্ষাৎকার প্রতিবেদনে বলা হয়, কয়েক দশক ধরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দল আওয়ামী লীগ এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এ দেশের রাজনীতিতে আধিপত্য বজায় রেখে আসছে। এই দলগুলো দ্রুত নির্বাচনের দাবি করছে। এ ক্ষেত্রে তাদের যুক্তি, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া উচিত।

নাহিদ ইসলাম বলেন, নির্বাচন যখনই হোক, তার জন্য প্রস্তুত থাকবে এনসিপি। তবে নির্বাচনের আগে ‘জুলাই বিপ্লবের প্রোক্লেমেশন’ নিয়ে মতৈক্যে পৌঁছানো জরুরি। এটা একটা সনদ হবে, যেটা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে তৈরি করার পরিকল্পনা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

এই সনদে বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন এবং গত বছরের সহিংসতায় প্রাণ হারানো এক হাজার মানুষের প্রতি সম্মান জানানো হবে। অন্তর্বর্তী সরকার এই প্রোক্লেমেশন তৈরি করবে বলে ঘোষণা দেওয়ার পর ছাত্ররা সংবিধান পরিবর্তনের দাবি থেকে সরে আসেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা যদি এক মাসের মধ্যে মতৈক্যে পৌঁছাতে পারি, তাহলে আমরা দ্রুত নির্বাচনের আহ্বান জানাতে পারব। কিন্তু এর জন্য যদি আরও সময় লাগে, তাহলে নির্বাচন বিলম্বিত হবে।’

এনসিপির তহবিল সম্পর্কে নাহিদ ইসলাম বলেন, দেশের অনেক সম্পদশালী ব্যক্তি তাদের দলকে অর্থ দিয়ে সহায়তা করছেন। দলের জন্য নতুন কার্যালয় চালু এবং নির্বাচনের জন্য একটি তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্যে তারা শিগগির ‘ক্রাউডফান্ডিং-এর দিকে যাবেন।

সূত্র: ওয়েবসাইট।

(ঢাকাটাইমস/৬মার্চ/মোআ)