পঞ্চগড়ে বিষ পানে মা-ছেলের মৃত্যু 

পঞ্চগড় প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ২৩:৫১

৫ বছরের ছেলেসহ নিজেও বিষ পান করার প্রায় এক সপ্তাহ পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে মা-ছেলের।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মা ও ছেলে দুজনেই মারা যান। তারা পঞ্চগড় জেলা শহরের নিমনগড় এলাকার মতিউর রহমানের স্ত্রী বিউটি আক্তার (২৮) ও ছেলে মুসা (৫)।

স্বামীর অনলাইন জুয়ার আসক্তি ও সংসারে অভাব অনটনের কারণে পারিবারিক কলহের জেরে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি ওই নারীর পরিবারের। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তার স্বামী মতিউর রহমান।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মতিউর রহমান ও বিউটি আক্তার দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ে মাইশার বয়স ১১ বছর। আর ছেলে মুসার বয়স ৫ বছর। মতিউর মসজিদে খাদেমের কাজ করতেন। পরে পঞ্চগড় বাসস্ট্যান্ডে চা বিক্রি করতেন। ব্যবসায় বড় লোকসান হওয়ায় হতাশ হয়ে আসক্ত হয়ে পড়েন জুয়ায়। সংসারে নেমে আসে অভাব অনটনে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হতো।

এদিকে স্বামীর এমন কর্মকাণ্ডে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন বিউটি। গত ১১ এপ্রিল মতিউর তার স্ত্রীকে না জানিয়ে তার শশুর বাড়ি যায়। সেখান থেকে মোবাইলে বিউটির সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় তার। এর কিছুক্ষণ পর তারা জানতে পারে বিউটি তার ছেলে মুসাকে বিষ পান করিয়ে নিজেও বিষ পান করেছে। তবে মেয়ে মাইশা পালিয়ে যাওয়ায় তার মুখে বিষ দিতে পারেনি। পরে তাদের উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।

সেখানে তাদের অবস্থার উন্নতি না হলে তাদের ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু টাকার অভাবে তারা ঢাকায় না নিয়ে ১৫ এপ্রিল দিবাগত রাত ২টায় আবার পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে ছেলে মুসা ও তার এক ঘণ্টা পরে মা বিউটি মারা যান। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

বিউটির বাবা আব্দুল বারেক বলেন, ওদের পরিবারের অন্যকোনো সমস্যা নেই। সমস্যা একটাই মতিউর জুয়া খেলে। কখনো রাতে বাড়ি ফিরে না। এটা নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হতো।

অভিযোগ অস্বীকার করে মতিউর রহমান বলেন, আমি ব্যবসায় ৩ লাখ টাকা লোকসান করেছি। সংসারে অভাব তাই বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছিলাম। পাসপোর্টও করেছি। আমার স্ত্রীকে না জানিয়ে শশুর বাড়ি যাওয়ায় তার সঙ্গে আমার ও আমার শ্যালকের কথা কাটাকাটি হয়। আমার স্ত্রীর রাগ একটু বেশি। এর কিছুক্ষণ পরেই শুনি আমার স্ত্রী আমার ছেলেকে বিষ খাইয়ে নিজেও বিষ পান করেছে। টাকা না থাকায় তাদের ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করাতে পারিনি।

পঞ্চগড় সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এইচএসএম সোহরাওয়ার্দী বিষ পানে মা ও ছেলের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আমরা আত্মহত্যার কারণ জানার চেষ্টা করছি। পরিবারের লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৭এপ্রিল/এমআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :