মুন্সীগঞ্জে ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ২০ জন

পুলিশের চাকরি পেতে ঘুষ দিতে হয় লাখ-লাখ টাকা! এমন কথা লোকমুখে প্রচলিত হলেও উল্টো বাস্তবতা দেখা গেল মুন্সীগঞ্জে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগে। মাত্র ১২০ টাকার আবেদন খরচেই শারীরিক ও মেধার যোগ্যতায় চাকরিতে উত্তীর্ণ হয়েছে জেলার ২০ জন চাকরিপ্রার্থী।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) মুন্সীগঞ্জ পুলিশ লাইনসে উত্তীর্ণদের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। পরে ফুল দিয়ে তাদের বরণ করে নেন পুলিশ কর্মকর্তারা। এ সময় আনন্দে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন উত্তীর্ণ ও তাদের অভিভাবকরা।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে পরীক্ষায় অংশ নেন মোট ২৪১ জন চাকরিপ্রার্থী। তাদের মধ্যে শারীরিক যোগ্যতা বিবেচনায় ভাইবার জন্য উত্তীর্ণ হন ২৩ জন। ভাইবাতে ২২ জন অংশ নেন এবং পরীক্ষায় ফলাফলের ভিত্তিতে ২০ জন উত্তীর্ণ হন। তাদের মধ্যে ১৮ জন পুরুষ ও ২ জন নারী।

উত্তীর্ণদের মধ্যে সদর উপজেলার জারিক হাসান সিয়াম একজন। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে আমার স্বপ্ন ছিল আইনশৃংখলা বাহিনীতে কাজ করার। এ স্বপ্ন আজ পূরণ হলো। অনেকে বলেন পুলিশে চাকরি পেতে অনেক টাকা লাগে। তবে আজ আমি প্রমাণ পেলাম কোনো ঘুষ ছাড়াই আমি উত্তীর্ণ হয়েছি।’

গজারিয়া উপজেলার সেঁজুতি রানী দাস বলেন, ‘আমাদের পরিবারে মা আর ৪ ভাইবোন, বাবা নেই। ঘুষ দিয়ে কোনো চাকরি পাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। আজ পুলিশে চাকরি পেয়ে আমার মনে হচ্ছে আমি পরিবারের পাশাপাশি দেশের জন্য কাজ করে যেতে পারব।’

একই রকম প্রতিক্রিয়া জানান আরো কয়েকজন। তারা জানান, এবারের উত্তীর্ণদের মধ্যে কেউ ছিলেন কৃষক পরিবারের সন্তান, কেউ গাড়িচালক কিংবা নিম্ন আয়ের পরিবারের সন্তান। তাদের স্বপ্ন পূরণের পথে সবার দোয়া চান তারা।

অভিভাবকরা জানান, দুর্নীতিমুক্ত নিয়োগের তাদের সন্তানদের দায়িত্ব পালনে দেশ ও জনগণের জন্য আরো বেশি দায়বদ্ধ করল।

এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. সামসুল আলম সরকার বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইজিপি মহোদয়ের নির্দেশে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নিয়োগ পরীক্ষা হয়। দুর্নীতিমুক্ত চর্চার উদ্যোগ থেকেই আমাদের পদক্ষেপ ছিল। আমাদের নির্দেশনা, আজ যারা টাকা ছাড়াই চাকরি পয়েছে, তারা ঘুষ-দুর্নীতি থেকে নিজেরা দূরে থাকবে এবং পুলিশের সঠিক পেশাদারিত্ব বজায় রাখবে।’

(ঢাকাটাইমস/২২মে/মোআ)